হেলমেট পরে কোটা সংস্কারপন্থিদের ওপর হামলা, আহত দুই শতাধিক
কোটা সংস্কারের আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে স্লোগানে স্লোগানে রাত থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসিতে জড়ো হন হাজারো শিক্ষার্থী। 'চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার', 'কোটা না মেধা? মেধা মেধা', 'তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তারা। রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও গেটের তালা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এরপর আজ সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন তারা। এর একপর্যায়ে, বেলা ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর শুরু হয় হামলা। হেলমেট পরে হাতে লাঠি, হকিস্টিক, ব্যাট, রামদা ইত্যাদি নিয়ে চালানো এই হামলায় আহত হন অনেকে। তাদের মধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
কোটা সংস্কারপন্থিদের দাবি, তাদের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। যদিও পরবর্তী পদক্ষেপ বা আইনি পদক্ষেপ নিয়ে এখনই কিছু জানাননি তারা। কতজন আহত হয়েছেন, সেই সংখ্যা অগণিত বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। যদিও ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের সংখ্যা ২০০ জনের মতো। আরও অনেকে আসছেন।'
হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, দলীয় কর্মীদের বাঁচাতে নয় বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ হিসেবেই আমরা রাস্তায় নেমেছি। সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ১০০ জন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা যখন হলে হামলা চালিয়েছে তখন ছাত্রছাত্রীরা বেরিয়ে এসে এই অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আমরা খুবই অবাক হয়েছি আশপাশের এলাকা থেকেও মানুষজন এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতকালের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টা থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এর আগে দুপুর ১২টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। সেই সময় অতিক্রান্ত হলে জড়ো হতে থাকেন কোটা সংস্কারপন্থিরা। আর বিকেল ৩টায় একইস্থানে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ছাত্রলীগ। পরে সাড়ে ৩টার দিকে ভিসি চত্বরের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, সামান্য আঘাত পেয়েছেন, তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। আর যাদের অবস্থা কিছুটা গুরুতর, তাদের জরুরি বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে স্থানান্তর করা হচ্ছে। আহতরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটার আঘাতে আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন।