মেধার জন্য লড়ে শহীদ আবু সাঈদ স্নাতকেও রেখেছেন মেধার পরিচয়
রংপুরে দুই হাত উঁচু করে নিজের বুকে গুলি ধারণ করা আবু সাঈদ লড়েছিলেন চাকরিতে মেধাকে প্রতিষ্ঠিত করতে। একাজে জীবন দিতে হয়েছিল তার। জীবনের বিনিময়ে গণআন্দোলনে বিপ্লবীদের শক্তি ও সাহস যোগানো এই শহীদ রেখে গেছেন মেধার পরিচয়। তার একটি প্রকাশ পায় সম্প্রতি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার রেজাল্টে। আর আজ রোববার (২০ অক্টোবর) পেল তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ফলে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এই শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় হয়েছেন ১৪তম।
গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
আজ রোববার ২০ অক্টোবর দুপুরে বেরোবি জনসংযোগ ও তথ্য প্রকাশনা দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের অনার্সের প্রকাশিত ফলাফলে ইংরেজি বিভাগের ৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪তম স্থান দখল করেছেন শহীদ আবু সাঈদ। তিনি সিজিপিএর ৪.০০ এর মধ্যে ৩.৩০ পেয়ে পাস করেছেন।
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর চুড়ান্ত অনুমোদনের পর সব বিভাগের ফল প্রকাশ করা হয়। এ সময় উপাচার্য ছাড়াও রেজিস্টার ড. তাজুল ইসলাম, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রামাণিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
ফল প্রকাশের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, আমাদের ভাবতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, আবু সাঈদের মতো মেধাবী আজ বেঁচে নেই। আবু সাঈদ আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, যারা আবু সাঈদকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।
ফলাফলের খবর প্রকাশের পর বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদের সহপাঠিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। রংপুরের পীরগঞ্জের বাবুনপুর গ্রামে বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগমসহ স্বজনরাও আক্ষেপে বুক ভাসান।
সন্তান হত্যার কঠোর বিচার দাবি করে মকবুল হোসেন বলেন, সন্তান বেঁচে থাকলে এই ফলাফল শুনে কতোই না খুশি হত। অথচ আজ সে আমাদের মাঝে নেই। রেখে গেছে তার মেধার চিহ্ন।