ঝিনাইদহে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ এক, তিন পুলিশসহ আহত ২৫
ঝিনাইদহের শৈলকূপায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ, তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে শৈলকূপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের বিপ্রবকদিয়া গ্রামের সাধুহাটি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি বর্ষণ করেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তিনটি বাড়ি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে শৈলকুপা থানার এসআই সিহাবসহ ১০ জনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে লিটন সিকদার নামের একজন গুলিবিদ্ধ।
রাত সোয় ৮টার দিকে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার ৭নং হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকু ও বিপ্রবকদিয়া গ্রামের হাইস্কুলের শিক্ষক মনিরুজ্জামান সাচ্চু জোয়ারদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে গ্রামবাসী। তাদের হামলায় আহত হন এসআই সিহাবসহ তিন পুলিশ সদস্য। এ অবস্থায় আত্মরক্ষায় তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালানো হয়েছে মর্মে স্বীকার করেন ওসি। আহত পুলিশ সদস্যদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫-১৬ জন আহত হয়ে থাকতে পারে বলেও জানান ওসি।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে আসামির সংখ্যা জানোনো হয়নি।
অন্যদিকে গ্রাম্য সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিপ্রবকদিয়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক মনিরুজ্জামান সাচ্চু জোয়ারদারের কলেজ পড়ুয়া ছেলে স্থানীয় সাধুহাটি বাজারে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজন বেদম মারপিট করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাচ্চু জোয়াদারের সমর্থকরা সেখানে ছুটে আসে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। খবর পেয়ে ওসিসহ মাত্র সাতজন পুলিশ সেখানে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু হলে গুলি ছুড়ে অত্মরক্ষার চেষ্টা করে তারা। একজন এসআইসহ তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। এ সময় পুলিশের গুলিতে আহত হন অন্তত তিন গ্রামবাসী। তাদের মধ্যে লিটন জোয়ারদার নামের এক ব্যক্তির নাম জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্য মতে, সাচ্চু জোয়ারদারের প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকুর লোকজন গ্রামে ঢুকে কমপক্ষে তিনটি বাড়িসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন। এ সংঘর্ষের জের ধরে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন শৈলকূপা সার্কেলের এএসপি অমিত বর্মণ।