নির্বাচনি সহিংসতায় পুলিশ কর্মকর্তা আহত
চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় নৌকা ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের এক উপপরির্শক (এসআই)। তাকে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়।
এ সময়ে নির্বাচনি অফিসে হামলা, মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন। গতকাল বুধবার রাত ৭টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসুন্দি ইউনিয়নের টিকারি বাজার ও ফুরসুন্দি এলাকায় কয়েক ধাপে এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশারসহ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা।
পুলিশ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে নৌকা ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ইউনিয়নের ফুরসুন্দি এলাকায় প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর কিছু সময় পর টিকারি বাজার নামক স্থানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তারা।
এ ঘটনার জের কাটতে না কাটতেই সকালে ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশের মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা ওই বাড়িতে জড়ো হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তহিদুজ্জামানসহ একদল পুলিশ সেখানে ছুটে আসে। এসআই তহিদুজ্জামান পলাশ হৃদরোগে মারা গেছেন মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন। এতে সেখানে উপস্থিত নৌকার সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ধাওয়া করে তাকে। স্থানীয় টিকারি বাজারে শুরু হয় পুলিশ ও নৌকার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। এ সময় গুরুতর আহত হন তিনি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা শহর থেকে সদর থানার ওসি শেখ সোহেল রানাসহ অতিরিক্ত পুলিশ বেলা ১১টার দিকে গোটা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর আগে নৌকার প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম সিকদারের ভাই ইমদাদুল হক সিকদারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। আনারস প্রতীকের সতন্ত্র প্রার্থী মো. আবু সাইদের বাড়িতেও নৌকার সমর্থকরা হামলা চালায় মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে উভয় প্রার্থী পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করছেন। দুই প্রার্থী একই গোষ্ঠীর এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। বাড়িও তাদের পাশাপাশি।
অন্যদিকে মৃত মাহমুদুল হক পলাশের স্ত্রী শিউলি বলেন, তার স্বামীকে কেও হত্যা করেনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজ সকাল ৭টার দিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত মেম্বর পদপ্রার্থীর ভাই শিমুল বলেন, বিষয়টি এখন ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তার ভাইকে কেও হত্যা করেনি বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, পরিবারের লোকজন পলাশের মৃত্যু নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন জানিয়েছে তাকে।