নেত্রকোনায় গুলির ঘটনায় দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত
কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নেত্রকোনার তিনটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে উৎসবমুখর পরিবেশে আজ বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ফাঁকাগুলি ছোড়ে। একই ইউনিয়নের দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত এবং উপজেলার রৌহা ইউনিয়নে হাসিমপুর ও শিমুলকান্দি কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষ্মীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আজহারুল হক তুহিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুল কাদের সুজার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুই পক্ষ মারমুখী হয়ে উঠলে পুলিশ ছয় রাউন্ড ফাঁকাগুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এই ইউনিয়নের বাইরাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আতকাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন ওই দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে।
অন্যদিকে, সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের হাসিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিমুলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগদলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. আবদুর রশিদের সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপিনেতা শফিকুল ইসলাম বাতেনের এজেন্ট স্বপন, শহীদ, আজহারুল ইসলামকে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। পরে পুলিশ শফিকুল ইসলাম বাতেনের এজেন্টদের ফের কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ তিনজনকে আটক করে। এ ছাড়া জেলার তিন উপজেলার বাকি ২৩টি ইউনিয়নে উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাইলাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌজে বালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতবেড়িকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠাকুরাকোনার বাঘরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোটাররা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে। পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল লতিফ শেখ জানান, সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ কেন্দ্রে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। একই ইউনিয়নের দুটি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ বিজিবি, র্যাব সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।