প্রকাশ্যে সিল মারার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা
শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার ভিডিও করায় সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রের সামনের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিক বি এম ইশ্রাফিল ডিবিসি টেলিভিশনের শরীয়তপুর প্রতিনিধি। আহত অবস্থায় তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুলাসার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ চলছিল। এ সময় ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য পদপ্রার্থী জিয়াসমিন বেগমের দেবর ও তাঁর আত্মীয়রা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনে প্রকাশ্যে নৌকা ও বই মার্কায় জাল ভোট দিচ্ছিল। সাংবাদিক ইশ্রাফিল সেই ভিডিও ধারণ করায় তাঁর ওপর হামলা করে। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকদের ধাক্কা মারে ও মোবাইল ক্যামেরা ভাঙচুর করে। পরে ইশ্রাফিলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত সাংবাদিক ইশ্রাফিল বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন বই প্রতীকের প্রার্থী জিয়াসমিন বেগমের লোকজন নৌকা ও বই মার্কায় সিল মারছিল। তখন আমি ভিডিও ধারণ করি। ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে তারা। এ সময় জাগো নিউজের ছগির, আরটিভির ইব্রাহীম, দীপ্ত টিভির রাজিব, বৈশাখী টিভির খালেক, ঢাকা পোস্টের মেহেদী ও নিউজ১৬বিডির সাংবাদিক আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি এই হামলার বিচার চাই।’
প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনা এবং সাংবাদিককে হামলার বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার শামীম মাহবুব বলেন, ‘ভোট চলাকালে পুলিং এজেন্টদের সঙ্গে সাংবাদিকরা তর্কে জড়ায়। এতে অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবিকুন নাহার জানিয়েছেন, তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে। এ কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বমি হলে বড় ধরনের সমস্যা হতো।
শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোকনুজ্জামান পারভেজ বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক ইশ্রাফিলের ওপর হামলা চালায়। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দোষীদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি প্রিজাইটিং কর্মকর্তার কাছে জানব। পরে তদন্ত করে দেখব।’