মুন্সীগঞ্জে নৌকার পরাজিত প্রার্থীর বাড়িতে হামলা
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার শিলই ইউনিয়নের নৌকার পরাজিত প্রার্থীর বাড়িঘর ভাঙচুর, ককটেল নিক্ষেপ ও লুটপাট করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার পূর্বরাখি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ইউনিয়নটিতে সদ্য নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পারভেজ মৃধা ও তার দলবল এ ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল রোববার তৃতীয় দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন ইউনিয়নটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মৃধা। নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন পারভেজ। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নৌকার সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করেন তিনি। অনেকে ভয়ে বাড়ি ছেড়েও চলে যায়। আজ বিকেল ৫টার দিকে পারভেজ মৃধার নেতৃত্বে একটি মিছিল নৌকার পরাজিত প্রার্থী ও সদ্য বিদায় নেওয়া চেয়ারম্যান আবুল হাসেমের বাড়ির দিকে আসে। তার কিছুক্ষণ পরই আবুল হাসেম এবং তার ছোট ভাই সাবেক ইউপি সদস্য ইসমাইল বেপারির বাড়িতে হামলা চালার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা তাদের বাড়িতে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী কাউসার দেওয়ান বলেন, আবুল হাসেমের ভাতিজিকে মারধর করলে আমি ছাড়িয়ে দেই। এরমধ্যে পারভেজ মৃধার নেতৃত্বের তার চাচাতো ভাই সুমন মৃধাসহ ২০-২৫ জনের চার-পাঁচটি দল ককটেল বিস্ফোরণ ও বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
ইসমাইল ব্যাপারির স্ত্রী লাবনী বেগম বলেন, আমার ঘর ভাঙচুর করে সাত ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার এবং ছয় লাখ টাকা লুটপাট করেছে। ঘরে থাকা সব ফার্নিচার ভেঙে তছনছ করেছে। আমরা ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছি।
নৌকার প্রার্থী আবুল হাসেম অভিযোগ করে বলেন, আমার লোকজনকে ইতিমধ্যেই গ্রামছাড়া করেছে পারভেজরা। আজ সন্ধ্যার কিছু আগে পারভেজ তার লোকজনদের নিয়ে এসে আমাদের বাড়িঘরে হামলা করে। বহু ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে। বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করে সবকিছু নিয়ে যায়। বাড়িতে থাকা সাত-আটজনকে পিটিয়ে আহত করেছে। তিনি আক্ষেপের সাথে বলেন, আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। কারো উপর কখনো জুলুম করিনি। সাধারণ মানুষ তো দূরে থাক, নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি।
অভিযোগের বিষয়ে পারভেজ মৃধা বলেন, আমরা কারো উপর হামলা করিনি। চেয়ারম্যান পরাজিত হয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা করেছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। আবুল হাসেম ও তার ভাইয়ের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে পারভেজের পক্ষের ৮-১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি। জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।