নকলা-নালিতাবাড়ীতে মনোনয়ন নিয়ে দুই দলেই দ্বন্দ্ব
শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ইউনিয়ন পরিষদ ৫২টি। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হওয়ায় দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তির জন্য চলছে দৌড়ঝাঁপ। এরই মধ্যে অনেক উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
তবে মনোনয়ন নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে ক্ষোভ। আর ক্ষোভ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে দ্বন্দ্ব, যা পৌঁছেছে সংঘাতের পর্যায়ে। নকলা উপজেলার উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন স্থানীয় বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সভাপতি আইয়ুব খান।
উরফা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নূরে আলম তালুকদার ভুট্টোকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে রেজাউল করিম হীরাকে। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হন আইয়ুব খান।
এ ব্যাপারে নূরে আলম তালুকদার বলেন, ‘মূলত নকলার পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রহমান লিটনসহ অন্যরা মনোনয়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। কিন্তু মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মেয়রকে তার জন্য অনুরোধ করেছিল। এ সময় তাদের চলে যেতে বাধা দেয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। হুড়োহুড়িতে আহত হয় আইয়ুব।’
আগামী ২২ মার্চ প্রথম পর্যায়েই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নির্বাচন। তাই নালিতাবাড়ীতে এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী তোড়জোড়। তবে নালিতাবাড়ীতে দুটি বড় দলের মধ্যেই রয়েছে অসন্তোষ।
১৮ ফেব্রুয়ারি নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে মনোনয়নবঞ্চিতরা ভাঙচুর করেছে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের আসবাবপত্র। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপি নেতারা টাকার বিনিময়ে মনগড়া মনোনয়ন দিয়েছেন। মনোনয়নে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও।
উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী মিজানুর রহমান মিজান অভিযোগ করেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী দলের কিছু না জেনেই ঢাকায় বসে মনগড়া প্রার্থী মনোনয়নের পরামর্শ দিচ্ছেন।’ তিনি এ ধরনের সিদ্ধান্ত মানেন না বলে জানান।
এদিকে, নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ‘১২টি ইউনিয়নেই নিয়মানুযায়ী মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। এখানে টাকা নিয়ে মনোনয়নের প্রশ্নই আসে না।’
এর আগেই নালিতাবাড়ীতে প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ। তবে এখানে সরাসরি কেউ বিদ্রোহ করেনি দলের বিরুদ্ধে। তবে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হলেও মনোনয়ন নিয়ে এখানেও রয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
এদিকে, শেরপুর সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নসহ শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের মনোনয়ন প্রদানের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন দল দুটির দায়িত্বশীল নেতারা।