যশোরের এক আসনেই নৌকায় চড়তে চান ১৮ নেতা, প্রতীকের দৌঁড়ে বাবা-ছেলেও
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি আসন। সব কয়টি আসনেই নৌকার মনোনয়ন নিতে আওয়ামী লীগনেতারা করছেন দৌড়ঝাঁপ। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা। এরমধ্যে একটি আসনেই ১৮ নেতা চান নৌকা প্রতীক। এমনকি, এই আসনে বাবা-ছেলেও কিনেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দলীয় মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে এমন তথ্যে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর-২ (চৌগাছা ও ঝিকরগাছা) থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নাসির উদ্দীন এবারও মনোনয়নপত্র কিনেছেন। পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামও মনোনয়নপত্র কিনেছেন। একই দৌঁড়ে আছেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তফা আশীষ ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ আলী রায়হান, গিলবার্ট নির্মল বিশ্বাস, কামাল হোসেন বিশ্বাস, হারুন অর রশিদ, আসাদুজ্জামান, মঞ্জুনাহার নাজনীন সোনালী, আব্দুস সালাম, মনিরুল ইসলাম, তৌহিদুজ্জামান, এস এম হাবিবুর রহমান, এ বি এম আহসানুল হক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার হোসেন ও মোস্তফা আনোয়ার পাশা।
জানা গেছে, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মোস্তফা আশীষ ইসলাম দলীয় মনোনয়ন ফরম এরই মধ্যে জমা দিয়েছেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পাদক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করা রফিকুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ এর নির্বাচনে যশোর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তার ছেলে ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করা মোস্তফা আশিষ ইসলাম এখন জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
পিতা-পুত্রের একইসঙ্গে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত আড়াই বছর ধরে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চৌগাছা ও ঝিকরগাছায় গণসংযোগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালিয়েছি। ছেলেকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি। তরুণ নেতৃত্ব দরকার। আবার এলাকার অনেকেই চান যে আমি নিজে যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। তাদের ভালোবাসা উপেক্ষা করতে পারিনি বলেই দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে তা জমাও দিয়েছি।’
এ বিষয়ে মোস্তফা আশিষ ইসলাম বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার দুই লাখেরও বেশি ভোটারকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নানারকম ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে এসেছি। এলাকার সংসদ সদস্য হতে পারলে এ দুই উপজেলাকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলব। সে কারণেই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।’
এদিকে যশোর-২-এর পর সর্বাধিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা) আসনের নেতারা। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায়সহ ১৩ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। অন্যরা হলেন—আরশাদ পারভেজ, মোহিত কুমার নাথ, সন্তোষ কুমার অধিকারী, এফ এম আশরাফুল কবীর, রবিন অধিকারী, সরদার অলিয়ার রহমান, নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার, শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর, আলমগীর হাসান রাজীব, শেখ আব্দুল ওহাব, সোলায়মান বিশ্বাস ও এনামুল হক বাবুল।
যশোর-১ (শার্শা উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীক পেতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, শাহাজাহান আলী গোলদার, নবী নওয়াজ মো. মুজিবুদ্দৌলা কনক ও আশরাফুল আলম লিটন।
যশোর-৩ (সদর উপজেলা) আসনের জন্য বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, সহসভাপতি মোবাশ্বের হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু ও দেলোয়ার রহমান দিপু মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
যশোর-৫ (মনিরামপুর উপজেলা) আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য ছাড়াও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ফারুক হোসেন, হুমায়ুন সুলতান, নাজমা খানম, শহিদুল ইসলাম মিলন, লেখক ভট্টাচার্য, নিতাই কুমার বৈরাগী, এস এম ইয়াকুব আলী, মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, আমজাদ হোসেন লাভলু, সুশান্ত কুমার মণ্ডল, কামরুল হাসান বারী ও জয়দেব নন্দী।
যশোর-৬ (কেশবপুর উপজেলা) আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এবারও মনোনয়ন চান। তাঁর পাশাপাশি এইচএম আমির হোসেন, কাজী রফিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রফিক, এস এম এবাদত সিদ্দিক বিপুল, নওরীন সাদেক, হোসাইন মোহাম্মদ ইসলাম, তাপস কুমার দাশ, আজিজুল ইসলাম ও প্রশান্ত বিশ্বাস মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।