কেন এত কাকপ্রীতি ভাবনার?
কাকের প্রতি আলাদা ভালোবাসা রয়েছে আশনা হাবিব ভাবনার। নিজের বাসার বারান্দায় পাখির জন্য খাবার রাখেন। অনেক পাখি খাবার খেয়ে যায়। তবে সেসব পাখির ভিড়ে কাকের সংখ্যাই বেশি। আর ভাবনার ভালোবাসা হয়তো বুঝতে পারে কাক, তাই তারা নির্ভয়ে খেতে আসে। এমন মত ভাবনারও।
এনটিভি অনলাইনকে ভাবনা বলেন, ‘কাক কিন্তু মানুষ দেখলে সরে যায়। তবে আমাকে বা আমার মাকে দেখলে সরে যায় না। তারা নির্ভয়ে খাবার খায়। আমার মনে হয়, তারা বুঝতে পারে, তাদের আমি কতটা লাভ করি।’
অভিনয়শিল্পী হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ভাবনা, নাচ দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা। এরই মধ্যে ‘গুলনেহার’ ও ‘তারা’ নামে তাঁর দুটি উপন্যাস প্রকাশ হয়েছে। অবসরে ছবি আঁকেন। তাঁর ছবি দেখে মুগ্ধ অনেকেই। ছবিতেও প্রাধান্য পায় কাক। অন্তর্জালে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি। কাক নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন।
ভাবনা বলেন, ‘কাক নিয়ে আমি কবিতা লিখেছি। ইচ্ছে আছে কিছুদিনের মধ্যে কবিতাটি পড়ব। সেটির সঙ্গে ভিডিও যুক্ত করে প্রকাশ করব।’ শুধু তা-ই নয়, তাঁর অভিনীত ‘ভয়ংকর সুন্দর’ চলচ্চিত্রেও রয়েছে কাক নিয়ে ‘চিরকুট’-এর একটি গান।
ভাবনা বলেন, ‘এ গানটি আমরা গল্পের সঙ্গে সমন্বয় করেই ব্যবহার করেছি। অনিমেষও (আইচ) জানে কাকের প্রতি আমার ভালোবাসা সম্পর্কে। কাক নিয়ে তার সঙ্গে আমার অনেক কথা হয়েছে।’
কাকের প্রতি ভাবনার ভালোবাসা ছোটবেলা থেকে। পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠা ভাবনার। ছোটবেলায় বাড়ির পাশে একটি মসজিদে আরবি পড়তেন তিনি। সে সময় পুরান ঢাকায় দেয়ালে আঁকা জয়নুল আবেদিনের ‘দুর্ভিক্ষ’ ছবিতে ডাস্টবিনের পাশের কাক দেখে ভালোলাগা। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় বুঝতে পারেন, তিনি কাক ভালোবাসেন।
ভাবনা বলেন, ‘প্রথম শ্রেণিতে আমাদের টিচার একদিন সবার কাছে জানতে চাইলেন, কার প্রিয় পাখি কী। আমি উত্তরে বললাম, কাক। আমার কথা শুনে সবাই হেসে দিল। তবে আমি হাসির কারণ বুঝতে পারিনি।’
এরপর বাবার কাছে ভাবনা জানতে চান, কেন সবাই হেসেছে। তখন বাবার কাছে জানতে পারলেন, কাক কালো, দেখতে সুন্দর নয়। কর্কশ গলা, তাই কেউ কাককে ভালোবাসে না। এসব শুনলেও মেনে নিতে পারেননি ভাবনা। কাকই তাঁর প্রিয় পাখি। যদিও এর জন্য বন্ধুদের যন্ত্রণাও সইতে হয়েছে তাঁকে।
ভাবনা বলেন, ‘প্রথম শ্রেণিতে পরীক্ষা শেষ করার পর বাবা আমার মাথা ন্যাড়া করে দেন। দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাসে যাওয়ার পর সবাই আমাকে বিরক্ত করা শুরু করে। সবাই বলে, কাক নাকি আমার মাথার চুল নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় বন্ধুরা আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। আমি কেঁদেছি পর্যন্ত।’
অনিমেষ আইচ পরিচালিত ‘ভয়ংকর সুন্দর’ আশনা হাবিব ভাবনাকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। তাঁর সাবলীল অভিনয় ভক্ত তো বটেই, সমালোচকদেরও প্রশংসা পেয়েছে। ওপার বাংলার পরমব্রতের বিপরীতে ভাবনার নজরকাড়া অভিনয় দীর্ঘদিন মনে থাকবে সবার। ছোটপর্দায়ও জনপ্রিয় মুখ ভাবনা। তাঁর অভিনীত ‘বুবুন যাবে শ্বশুরবাড়ি, সঙ্গে যাবে কে’, ‘বুবুনের বাসর রাত’, ‘বুবুনের হানিমুন’, ‘বুবুনের সংসার’ দর্শকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। করোনাকালে বাসায় থেকেও কাজ থেমে নেই তাঁর।