বাবার স্মৃতিকে জড়িয়ে ছবি শেয়ার করলেন তাহসান
সম্প্রতি বাবা হারিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তাহসান খান। বাবাকে নিয়ে তার অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। যেগুলো কিছুতেই যেন ভুলতে পারছেন না তিনি। বারবার শুধু বাবাকে নিয়ে স্মৃতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন এই কণ্ঠশিল্পী। তাই বাবার মৃত্যুর ১৫ দিন পরও আজ শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বাবার সঙ্গে তার শৈশবকালের একটি ছবি পোস্ট করেছেন তাহসান খান।
ছবিতে দেখা গেছে, শৈশবে তাহসান তার বাবার কোলে বসে খুঁনসুটি করছে। ছবিটি দেখতে অসাধারণ হলেও আজ শুধুই স্মৃতির পাতায় রয়ে গেল ছবিটি।
ছবিটি পোস্ট করার পর তিন ঘণ্টার ব্যবধানে লাইক পড়েছে ১০ হাজার। ২৫৪ জন কমেন্টে করেছেন। ইফতেখার কামাল নামে এক অনুরাগী কমেন্টে লিখেছেন, ‘বাবারা এমনই হয়, সব উজাড় করে দিয়ে যায়। রেখে যায় হাজারো স্মৃতি, আর আমাদের পথ চলার সাহস। পৃথিবীর সকল বাবা যেখানে থাকুক ভালো থাকুক। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতবাসী করুন।’
আরেক জন অনুরাগী তুষার আল সাদ্দাম কমেন্টে লেখেন, ‘ভাই, আঘাত আপনার জীবনে অনেক বার হানা দিয়েছে, কিন্তু আপনাকে ঠেকাতে পারিনি। কিন্তু, এই আঘাত আপনাকে জানি অনেকটা সময় ধরে ভোগাবে। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের অধিকারী করুক, আমিন।’
গত ১২ এপ্রিল রাত ৮টায় তাহসান খানের নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তার বাবা সানাউর রহমান খান।
গণমাধ্যমকে বাবার মৃত্যুর খবর জানিয়ে তাহসান বলেছিলেন, ওই দিন রাতে হঠাৎ করে বাবার শরীর খারাপ হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতেই বাবা চলে গেলেন। বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
তাহসান জানান, অনেক দিন ধরেই তার বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। গেলো ফেব্রুয়ারিতে একবার হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাকে। এরপর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বাসায় নেওয়া হয়।
সানাউর রহমান খানের জন্ম বিক্রমপুরে। বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার মুরাপাড়া গ্রাম। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ৮১ বছর হয়েছিল। তাহসান খানরা দুই ভাই।
তাহসান খান ১৯৭৯ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম তাহসান রহমান খান। যিনি তাহসান নামেই সর্বমহলে পরিচিত। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় গায়ক, গীতিকার, সুরকার, পরিচালক, অভিনেতা, মডেল এবং উপস্থাপক।
তাহসান শুরুতে ইউনিলিভারে ২০০৩-২০০৪ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। ২০০৬ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। ২০১০ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন মার্কেটিং এ গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১০ সালের মে থেকে তিনি ইউনির্ভাসিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বা ইউল্যাবে শিক্ষকতা করছেন।
তিনি ছায়ানট থেকে ছয় বছর রবীন্দ্রসংগীত শিখেছেন। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ও আরও কয়েকজন যুবক মিলে ব্যান্ডদল ব্ল্যাক গঠন করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যন্ড দল থেকে আলাদা হয়ে নিজস্ব ধারার গানে সম্পৃক্ত হন।
২০০৬ সালের ৩ আগস্ট তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলাকে। বিয়ের পর তাহসান মিথিলাকে নিয়ে বের করেন নিজস্ব এ্যালবাম। ২০১২ সালে তাহসান গঠন করেন তাহসান অ্যান্ড দ্য সুফিজ নামে নতুন একটি ব্যান্ড। বাংলামোটরে ‘কৃত্যদাসের আবাসে’ নামে তার নিজস্ব স্টুডিও রয়েছে।
২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তাহসান কন্যাসন্তানের বাবা হন। তার মেয়ের নাম আইরা তাহরিম খান। ২০১৭ সালের ২০শে জুলাই তাহসান তার স্ত্রী মিথিলার সাথে আসন্ন বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন।