হারিয়ে যাইনি, গানের মধ্যেই আছি : জাহিদ
২০১৬ সালে সংগীতশিল্পী ইমরান হোসেনের মাধ্যমে ‘মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা’ গান গেয়ে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঝড় তোলা জাহিদের কথা মনে আছে? কক্সবাজারে যাওয়া পর্যটকদের মাথা মালিশ ও বিভিন্ন আঞ্চলিক গান শুনিয়ে চার ভাইবোনের সংসার চালানো জাহিদের ভাগ্য বদলে গিয়েছিল ওই এক গানে। ইমরানের সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জাহিদ তিন ঘণ্টা গান শোনানোর চাকরি পায় সায়মন বিচ রিসোর্ট লিমিটেডে। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বও নেয় তার পড়াশোনার। এরপর জাহিদকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সে বছরেই জাহিদ গান গেয়েছিল আন্তর্জাতিক লোকসংগীতের উৎসব ‘ঢাকা ফোক ফেস্টে’। এরপর ২০১৮ সালে ‘পান’ শিরোনামের একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনো খবর নেই জাহিদের।
সম্প্রতি জাহিদকে আবার দেখা গেছে ইমরান হোসেনের ইউটিউব চ্যানেল ‘মেইড ইন বাংলাদেশে’। সেখানে গান শুনিয়েছে সে। জাহিদ আর সেই ছোট্টটি নেই। এখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এসেছে জাহিদের সাম্প্রতিক জীবন, হালচাল, গানের খবর।
এনটিভি অনলাইন : অনেক দিন পর তোমার গান শুনলাম। কেমন আছ আর এখন কী করো তুমি?
জাহিদ : ভালো আছি। আমি এখনো সায়মনে জব করি। পাশাপাশি পড়াশোনা করছি; কলাতলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর নিজে নতুন একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি। সেখানে কাজ করছি।
এনটিভি অনলাইন : হোটেল সায়মনে এখনো প্রতিদিন গান শোনাও?
জাহিদ : করোনার জন্য প্রায় পাঁচ মাস গান শোনানো হয় না।
এনটিভি অনলাইন : তাহলে তোমার সংসার চালাতে অসুবিধা হচ্ছে না?
জাহিদ : হোটেল থেকে আমার পরিবারকে তিন বেলা খাবার দেওয়া হয়। আর হোটেলে আমার ভাই গত মাস থেকে জয়েন করেছে। তাকে চার হাজার টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। আগে আমাকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দিত। লকডাউনের পর দুই হাজার করে টাকা দেয়।
এনটিভি অনলাইন : এই টাকায় পরিবার চালাতে অসুবিধা হচ্ছে না?
জাহিদ : একটু তো অসুবিধা হচ্ছেই। কিন্তু কিছু তো করার নেই।
এনটিভি অনলাইন : তোমার গান শেখার কী খবর?
জাহিদ : আমি কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আছি। গিটার প্র্যাকটিস করি। কিন্তু এখন ওটা বন্ধ হয়ে গেছে। গিটার শেখার শুরুর দুই সপ্তাহ বাদে ওটা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আপাতত কিছুই শেখা যাচ্ছে না। বাসায় বসে আছি, ঘোরাফেরা করছি।
এনটিভি অনলাইন : ২০১৮ সালে ‘পান’ শিরোনামে একটি গান গেয়েছিলে। সেই গানে অভিনয়ও করেছিলে। এরপর খবর নেই কেন?
জাহিদ : না, এখন সাড়া পাচ্ছি না। হোটেলে পাড়ি আছি সে জন্য।
এনটিভি অনলাইন : তাহলে আগের সেই জাহিদ তো হারিয়ে যাচ্ছে...
জাহিদ : ইমরান ভাইয়ের সঙ্গে গান করার পর সবাই আমাকে চেনে। এরপর আর ভাইয়ের সঙ্গে গান করা হয়নি; তাই সবাই মনে করে আমি হারিয়ে গেছি। আসলে আমি হারিয়ে যাইনি, গানের মধ্যেই আছি।
এনটিভি অনলাইন : তাহলে এখন তোমার পরিকল্পনা কী?
জাহিদ : আমি আবার ইমরান ভাইয়ের কাছে যেতে চাই। ভাইয়ার সঙ্গে গান করতে চাই।
এনটিভি অনলাইন : ইমরানের সঙ্গে চার বছর আগে গান গেয়ে আলোচনায় এসেছিলে। সম্প্রতি আবার গান গাইলে ভাইয়ের সঙ্গে। দুই সময়ের পার্থক্য কেমন?
জাহিদ : আগে মানুষ সম্মান দিত না; সম্মান দিয়ে কথা বলত না। সবাই টোকাই মনে করে ব্যবহার করত। আগে আমি নিজে গিয়ে গান শোনাতাম আর এখন মানুষ আমার কাছে এসে গান শুনতে চায়। এটা আমার অনেক ভালো লাগে। মানুষ আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।