পাপ্পুর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি : আবদুন নূর তুষার
জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা পাপ্পু আর নেই। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিচিতদের মধ্যে। পাপ্পুর সঙ্গে সখ্য ছিল জনপ্রিয় উপস্থাপক আবদুন নূর তুষারের। কাজের বাইরেও তাঁরা অনেক সময় কাটিয়েছেন একসঙ্গে। পাপ্পুর আকস্মিক চলে যাওয়ায় শোকগ্রস্ত তুষার স্মৃতিচারণ করেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
পাপ্পুর সঙ্গে প্রথম দেখা
১৯৯৫ সালে পাপ্পুর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয়। পাপ্পু আমার কাছে কিছু কৌতুক লিখে নিয়ে এসেছিল। কৌতুকগুলো আমি পছন্দ করিনি। পরে আমি ওকে কৌতুক লিখে দিতাম। সেই কৌতুকগুলোই পাপ্পু অনুষ্ঠানে বলত।
পাপ্পুর সঙ্গে স্মৃতি
পাপ্পুর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। ওকে নিয়ে আমি ‘শুভেচ্ছা’ ছাড়াও ‘আনন্দ আলো’ ও এনটিভির ‘সাদাকালো’ অনুষ্ঠান করেছি। পাপ্পুর মধ্যে অনেক শিশুসুলভ আচরণ ছিল। আমি কৌতুক লিখে দিয়ে যদি কোনো লাইন কেটে দিতাম, তখন পাপ্পু খুব মন খারাপ করত। আমাকে মন খারাপ করে বলত, ‘এই লাইনগুলো আপনার এডিট করা ঠিক হয়নি।’ আমি তখন ওকে হেসে বলতাম, ‘তোর মন খারাপ হচ্ছে কেন? লাইনগুলো তো আর তুই লিখিসনি।’ তখন ও বলত, ‘আমি না লিখলেও আপনি যেটা এডিট করছেন, ওই লাইনগুলো বেশি ভালো ছিল।’ আমি ‘শুভেচ্ছা’য় উপস্থাপনা করার সময় যখন বলতাম, ‘এবার আসছে পাপ্পু’—এই কথাটা পাপ্পু খুব পছন্দ করত। আমাকে বলত, ‘আমি অন্য কোথাও অনুষ্ঠান করলে আমাকে কেউ এভাবে শ্রদ্ধা করে ডাকে না, আপনি বড় শিল্পীদের মতো করে আমাকে ডাকেন, এটা আমার অনেক ভালো লাগে।’
একবার পাপ্পু ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। ছিনতাইকারী পাপ্পুর সবকিছু নিলেও ঘড়িটা শুধু নেয়নি। এ জন্য পাপ্পু অনেক খুশি ছিল। ঘটনাটা এ রকম ছিল—পাপ্পু ছিনতাইকারীকে বলেছিল, ‘ভাই, আমারে চিনতে পারছেন, আমি পাপ্পু। তখন ছিনতাইকারীরা বলছিল, হ চিনছি। এ জন্য আপনার চোখে মলম দিইনি। তার পর পাপ্পু বলেছিল, তাহলে আমার ঘড়িটা নিও না। কারণ, ঘড়িটা আমার আম্মায় দিছে।’
তখন ছিনতাইকারীরা তাঁর ঘড়িটা নেয়নি। পাপ্পু এ ঘটনা সবাইকে বলতে গিয়ে অনেক গর্ব বোধ করত। আমাকে এসে বলেছিল, “জানেন, আপনার ‘শুভেচ্ছা’য় সবাই আমারে দেখে, তাই ছিনতাইকারীও আমার ঘড়িটা নেয় নাই।”
পাপ্পুর অজানা কথা
পাপ্পুর নাচের একটা নিজস্ব দল ছিল। সেখানে ও নাচ করত। এলাকার ডিশলাইনে পাপ্পু নিজে কিছু নাচ-গানের ভিডিও ও জোকস বানিয়ে ছেড়ে দিত। এলাকার দর্শক খুব পছন্দ করতেন পাপ্পুর বানানো অনুষ্ঠানগুলো। পাপ্পু সব সময় তেহারি, বিরিয়ানি, পোলাও এসব খেতে খুব পছন্দ করত।