আমার সাফল্যের রহস্য ধৈর্যশক্তি : মিম
বিদ্যা সিনহা মিমকে এখন সবাই ‘ফুলেশ্বরী’ বলেই ডাকছে। কেন ডাকছে? যাঁরা তন্ময় তানসেন পরিচালিত ‘পদ্ম পাতার জল’ ছবিটি দেখেছেন, তাঁদের কাছে কারণটি অজানা নয়। এতে ‘ফুলেশ্বরী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিম। নিজের অভিনীত চরিত্রের নামেই এখন সবার কাছে নতুনভাবে পরিচিত হয়ে উঠছেন তিনি।
‘ফুলেশ্বরী’ নামটা কি মিমের পছন্দ? মিম সরল ভঙ্গিতে উত্তর দিলেন, ‘আমি তো ফুলেশ্বরীর প্রেমে পড়ে গিয়েছি। নামটাও খুব চমৎকার। যতক্ষণ অভিনয় করেছি, ঠিক ততক্ষণই চরিত্রের মধ্যে ডুবে ছিলাম। এখনো আছি।’
ফুলেশ্বরীর দেওয়া কোন সংলাপটি প্রিয়—জানতে চাইলে মিম বলেন, ‘একটা সংলাপ অনেক বেশি প্রিয় সেটা হলো, “আমি কি সাধারণ নারী, যে চাইলেই স্বপ্ন সত্যি হবে? আমি চির বসন্তের অধিবাসী। সবার জীবনে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা আসে; কিন্তু আমার জীবনে একটাই ঋতু—বসন্ত! হৃদয়টা শীতের জমাট বরফ, কিন্তু বাহিরটা ঠিকই ‘বসন্ত’। চোখে লুকানো বর্ষা, কিন্তু সবাই দেখে বসন্তের কাজল। ভেতরে চৈত্রের দহন, বাহিরে বসন্ত। আমি চির বসন্তের ফুল, তাই আমার নাম—ফুলেশ্বরী।”
নিজেকে কি কখনো ফুলেশ্বরী মনে হয়েছে? ‘কখনো কখনো মনে হয়েছে। কারণ, ফুলেশ্বরী একজন বাইজি। আমি একজন তারকা অভিনেত্রী। ফুলেশ্বরীর মন চাইলে যেমন সে বাইরে ঘোরাফেরা করতে পারে না, আমিও পারি না। আমি এখন চাইলেই রিকশায় উঠে শহর ঘুরতে পারব না,’ মিমের সোজা জবাব।
‘পদ্ম পাতার জল’ ছবির অভিজ্ঞতা নিয়ে মিম বলেন, ‘ছবির কিছু দৃশ্যের শুটিং বান্দরবানের একটা উঁচু পাহাড়ের ওপর হয়েছিল। আবহাওয়া ছিল খুব ঠান্ডা আর অনেক বাতাস ছিল। শট একবারে ওকে হলেও বাতাসের জন্য এক শট পাঁচ থেকে ছয়বার দিতে হয়েছে। আর কিছু দৃশ্যের সংলাপ দিতে গিয়ে আমি সত্যি সত্যি কেঁদেছি। আমার সঙ্গে সঙ্গে পরিচালক এবং ইউনিটের সবাই কেঁদেছেন। ফুলেশ্বরীর কষ্টগুলো আমরা কেউই মানতে পারছিলাম না। ছবির গল্পটি অসাধারণ।’
বিজ্ঞাপন, মডেলিং ও নাটকে সফল হওয়ার পর ঢালিউডের প্রথম সারির নায়িকার স্থানও অর্জন করতে যাচ্ছেন মিম। এই বিরাট সাফল্যের রহস্য কী? প্রশ্ন করতে মিম এক শব্দে বললেন, ‘ধৈর্যশক্তি। আমার লক্ষ্য ঠিক রেখে আমি সামনে এগিয়ে চলছি। দর্শক ফুলেশ্বরীর চরিত্র নিয়ে আলাপ করছে। চরিত্রটি নিয়ে ভাবছে। এটাই তো আমার অভিনয়ের সার্থকতা। আমার পরিবার, মিডিয়ার সবাই আর দর্শক আমাকে যদি উৎসাহ না দিত, কখনো আমি আমার টার্নিং পয়েন্টে পৌঁছাতে পারতাম না। পেছনে তাকানোর সময় আমার এখন নেই।’
ছবিতে মিমের নায়ক ইমনের অভিনয়ও প্রশংসিত হয়। একজন দর্শক হিসেবে ছবির নায়ককে কত নম্বর দেবেন—প্রশ্ন করতে মিম বলেন, ‘আমি ১০-এ ৯ দেব। ছবির নায়ক অনেক সরল ও বোকা। মানুষের কানকথা বিশ্বাস করে। ফুলেশ্বরীর ভালো চাইতে গিয়ে নিজের ভালোবাসাকে বিসর্জন দিতে চায়। চরিত্রটা কিন্তু চ্যালেঞ্জিং ছিল।’
‘ফুলেশ্বরী’ চরিত্রের মধ্যে ডুবে থেকে এখনো মিম দর্শকের সঙ্গে হল ঘুরে ঘুরে ছবি দেখছেন আর বিস্মিত হচ্ছেন দর্শকের ভালোবাসা দেখে। একটু আবেগী কণ্ঠে মিম বললেন, ‘দর্শকের এই ভালোবাসা আমি সারা জীবন ধরে রাখতে চাই। আমি মরে গেলে সবাই যেন বলে, মিম কে চেনেন তো? বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রী ছিলেন। অনেক চরিত্রে অভিনয় করে সফল হয়েছেন। ‘ফুলেশ্বরী’ সেই চরিত্রগুলোর মধ্যে একটি।
মিমের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে তো? দর্শক চাইলে কেন নয়?