ভালো থাকিস রে বন্ধু : পুতুল
আজ ২৯ জুলাই শিল্পী আবিদ শাহরিয়ারের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। চার বছর আগে ২০১১ সালে আজকের এই দিনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারান তিনি।
২০০৫ সালের “ক্লোজ আপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খুব দ্রুত সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন আবিদ। সাবলীল বাচনভঙ্গি ও গায়কী দিয়ে অর্জন করে নিয়েছিলেন অসংখ্য ভক্তের হৃদয়।
আবিদের প্রিয় বন্ধুদের একজন ক্লোজআপ তারকা পুতুল। ফেসবুকে প্রিয় বন্ধু আবিদকে নিয়ে একটা ছবির অ্যালবাম করেছেন তিনি। অ্যালবামের নাম রেখেছেন ‘ভালো থাকিস রে বন্ধু’।
আবিদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন সংগীতশিল্পী পুতুল।
শেষ দেখা
আবিদের সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ২০১১ সালের ৩ জুলাই। এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা একটা অনুষ্ঠান করেছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে আমাদের দুজনের শেষ দেখা হয়। সেদিন হঠাৎ করে আবিদ আমাকে বলেছিল, ‘তোর মতো এ রকম বন্ধু আর আমার নাইরে- যাকে আমি মনের কথা সব খুলে বলতে পারি। তুই আমার অসাধারণ এক বন্ধু।’
কেমন ছিল আবিদ
আবিদ তাঁর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকত। ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্রিক অনেক কিছু চিন্তা করত। কিন্তু হঠাৎ করে গান-বাজনার প্রতি উদাসীন হয় পড়ে আবিদ। আমি ওকে খুব বকা দিতাম। গানে মনোযোগ দেওয়ার জন্য বলতাম। আমার কাছে মনে হয় গান নিয়ে ও হতাশায় ছিল। হয়তো নিজের সঠিক মূল্যায়নটা পায়নি। আজ ওকে সবাই মিস করছে। ইস! এটা যদি ও একবার দেখতে পেত।
শেষ কথা
১৮ জুলাই রাতে আমি ওকে ফোন দেই। তখন ও কক্সবাজারে ছিল। সেদিন ছিল ওর জন্মদিন। আবার শবে বরাতের রাত ছিল সেদিন। আমি শুভেচ্ছা জানালাম তখন ও আমাকে বলেছিল- ‘সবার আশীর্বাদ চাই যেন ভালো থাকতে পারি।’
মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর
আমি যখন ওর মৃত্যুর সংবাদ শুনি তখন বিশ্বাস করতে পারিনি। আমি তখন দেশ টিভির একটা লাইভ অনুষ্ঠান করার জন্য মেকআপ নিচ্ছিলাম। মেকআপ নেওয়া বন্ধ করে ওকে ফোন দিলাম। দেখলাম ফোন রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না। তখনই বুঝলাম সবাই সত্য বলছে। তারপরও বিশ্বাস হতে চায়নি। আবিদকে যখন বাংলাদেশ-জাপান ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালে আনা হলো তখনই ওকে শেষবারের মতো দেখি। ওর লকেটটা চোখে পড়ার পর বুঝি এই সেই আমার বন্ধু আবিদ। আমার বাসা ওই হাসপাতালের পাশে। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন যখন বাড়ি ফিরি তখনই আবিদকে মিস করি। আমি ওর সম্পর্কে কাউকে কিছু বলতে গেলে থেমে যাই। কিছু কথা শুধু আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাক।
কেমন আছে আবিদের পরিবার
আবিদের বাসায় মাঝে মাঝে যাই। ওর মা (আন্টি) এখনো স্বাভাবিক হতে পারেননি। এই একটা ঘটনাই তাঁর জীবন থেকে সব আলো কেড়ে নিয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত হাসেননি। বাসায় ঢুকলে মনে হবে এটা আবিদের জাদুঘর। আবিদের সবকিছু ভালোভাবে গুছিয়ে রেখেছেন তিনি।
আবিদের কণ্ঠে পুতুলের প্রিয় গান
‘দিবস-রজনী আমি যেন তার আশায় আশায় থাকি....’