চাইনি লোকে আমাকে অনন্ত জলিল ডাকুক : রাহশান
‘আপনার মতো কণ্ঠ এর আগে শুনিনি।’ ফেসবুক মেসেঞ্জারে এই কথাটা অনেকবার শুনতে হয়েছে ‘বেঙ্গলি বিউটি’ ছবির অভিনেতা রাহশান নূরকে। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবিটি পরিচালনাও করেছেন তিনি। গত শুক্রবার স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাওয়া ‘বেঙ্গলি বিউটি’ এখনো দেখছেন দর্শক। ছবিটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন রাহশান নূর।
এনটিভি অনলাইন : এ সময়ে ‘বেঙ্গলি বিউটি’র গল্প আপনি কেন বলতে চেয়েছেন?
রাহশান নূর : আমাকে একজন বলেছিলেন, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের সময় মানে যুদ্ধের ছবি বেশি নির্মাণ হয়। তখন আমি এর পরবর্তী সময়ের বিষয়গুলো স্ক্রিনে ধারণ করার কথা চিন্তা করি। সময় হিসেবে বেছে নিই ১৯৭৫ সালকে। সেই সময়ের চিত্র, রোমান্স এসব দেখানোর ইচ্ছে হয়েছিল আমার।
এনটিভি অনলাইন : ছবির শুটিংয়ের সময় বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল কোন অংশটি?
রাহশান নূর : বাংলাদেশ বেতারে। এটাই মনে হয় প্রথম ছবি, যেটি বাংলাদেশ বেতারে শুটিং করা হয়েছে। চিত্রনাট্যে বাংলাদেশ বেতার ছিল, তাই সেখানকার কর্তৃপক্ষকে অনেক বুঝিয়ে শুটিং করেছি আমরা।
এনটিভি অনলাইন : ছবির একটি সংলাপ ছিল ‘আমি সাইক্লোন, আমি টর্পেডো, আমি বিদ্রোহী’। এমন সংলাপ রাখার কারণ কী?
রাহশান নূর : অনিরাপত্তা ও ভয়, এটাই ছিল ছবির প্রধান থিম। তাই এই সংলাপ। ছবিতে ডিজে আফজাল যে চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি, সে সময়ের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে চায়। দেখুন, আমাদের সবাইকে সাহসী হতে হবে। কিছুদিন আগেও আমরা জানতাম না ‘বেঙ্গলি বিউটি’ হলে মুক্তি পাবে। গত এক বছরে অনেক কিছু শিখেছি আমি। অনেক চাপে ছিলাম। হতাশায়ও ছিলাম। অবশেষে আমরা সফল।
এনটিভি অনলাইন : ছবিতে টয়াকে দেখে সারা আপনাকে প্রশ্ন করেছিল, ‘ওটা কে ছিল?’ উত্তরে আপনি বলেছেন, ‘বেঙ্গলি বিউটি’। টয়াকে কাস্টিং কীভাবে করলেন?
রাহশান নূর : যখন আমি ‘বেঙ্গলি বিউটি’ লিখি, তখন টয়ার মতো একটা মেয়ের কথাই ভেবেছিলাম। টয়াকে দেখার পর আমার মনে হয়েছিল, এই সেই বেঙ্গলি বিউটি। পরে টয়ার সঙ্গে কথা বলে তাঁকে কাস্টিং করেছিলাম।
এনটিভি অনলাইন : এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি। আপনার বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সব যুক্তরাষ্ট্রে। হঠাৎ সিনেমার বানানোর ভূত কেন চাপল?
রাহশান নূর : একটা স্কুলে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আমি প্রথম ছবি নির্মাণ করেছিলাম ‘কিংস অব ডিভান’। যুক্তরাষ্ট্রের চারটি শহরে এই ছবি ভালোভাবে চলেছিল। আমার কাছেরজনরা এখানে অভিনয় করেছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রমিস ল্যান্ড’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ হয় আমার। এর পর একে একে বাংলা ছবি ‘সীমানাহীন’, ইংরেজি ছবি ‘দ্য স্পেকটেকুলার জিহাদ অব ট্যাজ রহিম’সহ আরো কিছু কাজ আমার করা হয়। এভাবে ধীরে ধীরে ছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত হই আমি।
এনটিভি অনলাইন : অনেক দিন ধরেই তো আপনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত। ‘বেঙ্গলি বিউটি’ এত পরে কেন নির্মাণ করলেন?
রাহশান নূর : আমি চাইনি লোকে আমাকে অনন্ত জলিল ডাকুক। যেহেতু বেঙ্গলি বিউটির আমি লেখক, পরিচালক ও অভিনেতা। এর আগে আমি বেশ কিছু কাজ করতে চেয়েছিলাম।
এনটিভি অনলাইন : ফেসবুক মেসেঞ্জারে এখন কোন ধরনের বার্তা বেশি পাচ্ছেন?
রাহশান নূর : ‘ছবিতে আপনার মতো কণ্ঠ এর আগে শুনিনি’, এ ছাড়া এর আগে বেশি মেসেজ পেয়েছি ‘ভাই, ছবিটা মুক্তি পাবে কবে?’
এনটিভি অনলাইন : এর পরে কী ছবি নির্মাণ করবেন?
রাহশান নূর : সুফি ও অ্যাকশনধর্মী ছবি নির্মাণ করতে চাচ্ছি, নাম ‘তরিকা’। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার ছবি হবে এটি। ছবিটি এই তিন দেশেই মুক্তি পাবে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
রাহশান নূর : বাংলাদেশে সুযোগ পেলে আরো ছবি বানাব। আমি দেশের ছবির গ্লোবাল দর্শক চাই। হলিউডের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও করব।