‘বহুব্রীহিতে মিস এষা চরিত্রটি ভালো লেগেছে’
লাকী ইনাম। ‘ষড়ৈশ্বর্য’খ্যাত লাকী ইনাম গুণী শিল্পী, নাট্যকার, নির্দেশক, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং নাট্যশিক্ষক হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়। আজ বুধবার তাঁর ৬৮তম জন্মদিন।
১৯৫২ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের কিংবদন্তি এ শিল্পী। ২০১৮ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
মঞ্চে তো বটেই, টিভি নাটকেও লাকী ইনাম ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’-এর মতো বিপুল জনপ্রিয় নাটকে তাঁর অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ওই নাটকে তাঁর চরিত্র ও সংলাপ আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ‘বহুব্রীহি’ নাটকে ‘মিস এষা’ ও ‘অয়োময়’ নাটকে ‘মির্জাবাড়ির বড় বউ’ চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজো মানুষ মনে রেখেছে। বিশেষ করে ইউটিউবের কল্যাণে জনপ্রিয় নাটকগুলো এখনকার প্রজন্মও দেখে। লাকী ইনাম নিজেই জানালেন ওই দুই চরিত্রে অভিনয় করে তাঁর ভালো লেগেছে।
গুণী এই শিল্পীর জন্মদিনে এনটিভি অনলাইন তাঁর সঙ্গে কথা বলে।
এনটিভি অনলাইন : জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আজকের বিশেষ দিনটি কীভাবে কাটাচ্ছেন?
লাকী ইনাম : ধন্যবাদ। গতানুগতিক যে কাজগুলো করতেই হয়, সেগুলো করেই কাটাচ্ছি। প্রতিদিন সকালে উঠে হাঁটি। আমার দুটো নাতি, একটি নাতনি। ওদের নাম হিং, টিং ও পট। সকালে ওদের ধানমণ্ডিতে স্কুলে দিয়ে এলাম। এর পরে আমি বেইলি রোডে গিয়েছি কাজে। দুপুরবেলায় নাতি-নাতনিদের নিয়ে এলাম। এর ফাঁকে জর্জ বার্নার্ড শর একটি নাটক অনুবাদ করছি। সেটিরও কাজ চলছে। বিকেলে যাব গ্রুপ কল রিহার্সেলে। সেখানে হয়তো আমার নাগরিক নাট্যাঙ্গনের শিল্পীরা কিছু আয়োজন করবে। সেখানে একটু হৈ হৈ-রৈ রৈ হবে। রিহার্সেলও হবে।
এনটিভি অনলাইন : জন্মদিন উপলক্ষে পারিবারিক কোনো আয়োজন আছে কি?
লাকী ইনাম : পারিবারিক আয়োজন আমি করতে দিই না এখন আর। এটিকে আমার কাছে সৃজনশীলতাবিহীন সময়ক্ষেপণ মনে হয়।
এনটিভি অনলাইন : আপনি তো অনেক গুণে গুণান্বিত। একাধারে আপনি নাট্যকার, নির্দেশক, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং নাট্যশিক্ষক। কোন পরিচয়ে আপনি সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
লাকী ইনাম : আসলে এগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি ভীষণভাবে জড়িত। প্রথমে অভিনয় দিয়ে শুরু করেছি। এরপর নাটক লেখা শুরু করেছি। তারপর নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেছি। আসলে যখন যেটির জন্য অভিজ্ঞতার জায়গাটি পোক্ত হয়েছে, তখন সেই কাজটিই করেছি। এই তিনটি কাজ করার পরে আমি ২০০৫ সালে ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’ নামক থিয়েটার স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। এটি আমি বেশ উপভোগও করছি। আর নাচ ও সংগীত ছোটবেলা থেকেই শিখেছি। সংস্কৃতিপ্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি আমি। বাবা-মা ভীষণ উৎসাহ দিতেন।
এনটিভি অনলাইন : অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। কোন নাটক বা চরিত্রে এখনো মনে দাগ কাটে?
লাকী ইনাম : শত শত নাটকে অভিনয় করেছি। অনেক নাটক বা চরিত্রের কথাই বলা যায়। টিভি নাটকের কথা বলতে গেলে, প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘বহুব্রীহি’ নাটকে ‘মিস এষা’ চরিত্রটি ভালো লেগেছে। ‘অয়োময়’ নাটকে আমার অভিনীত ‘মির্জাবাড়ির বড় বউ’ চরিত্রটি এখনো মানুষ মনে রেখেছে। মঞ্চনাটক শুরু করেছিলাম ১৯৭২ সালের ১৭ জুলাইতে। বিখ্যাত নাটক ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’-তে ‘ফাতেমা’ চরিত্র দিয়েই আমার যাত্রা শুরু। এরপর অসংখ্য কাজ করেছি। ‘সরমা’নাটকে আমি ‘কনা’চরিত্রটিতে অভিনয় করেছি। এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং নাটক ছিল। এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তির উপায়’ নাটকে ‘হৈম’ চরিত্রটিতে অভিনয় করেছি।
এনটিভি অনলাইন : থিয়েটারে কত বছর পূর্ণ হলো?
লাকী ইনাম : রেডিও, টেলিভিশন, থিয়েটার—তিন অঙ্গনেই আমার পথচলা শুরু ১৯৭২ সালে।
এনটিভি অনলাইন : মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
লাকী ইনাম : আপনাকেও ধন্যবাদ।