ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী ১০ হলিউড তারকা
ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও টিভি ব্যক্তিত্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হয়ে লড়তে চাওয়া এই ব্যক্তি ইতিমধ্যেই তাঁর অদ্ভুত সব যুক্তি আর প্রস্তাবনা দিয়ে কুড়িয়েছেন দুনিয়াজোড়া মানুষের তিরষ্কার, ওঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রে। বিশেষত ‘অভিবাসন’ বিষয়ে তাঁর মতামত এবং মন্তব্য ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে অনেক। তাঁর সমর্থকের তালিকা কতখানি লম্বা, তা নিয়ে হয়তো সংশয় রয়েছে। তবে, তাঁর বিরোধীদের তালিকা যে বিশাল সেটা সুনিশ্চিত। আর বিভিন্ন মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে তাঁর বিরোধী তালিকায় নাম লিখিয়েছেন অনেক সেলিব্রেটিই। ট্রাম্পবিরোধী এমন ১০ হলিউড তারকা কথাই থাকছে এই আয়োজনে।
লেডি গাগা
‘মাদার মনস্টার’ নামে খ্যাত এই গায়িকা লস অ্যাঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন এক ভক্তকে। আর হঠাৎই সেই ভক্ত গাগাকে জিজ্ঞেস করে বসেন যে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন কি না? জবাবে গাগা মুখে কিছু বলেননি বটে, সোজাসাপ্টা আরেকটি ‘ক্ল্যাসিক গাগা’ ভঙ্গিমায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি মোটেও ট্রাম্পকে নয়, বরং হিলারিকে সমর্থন করেন। এই ভঙ্গিমার ব্যাখ্যায় পরবর্তী সময়ে ‘গাগা ডেইলি’তে প্রকাশ করা হয় যে—প্রতিউত্তরে সেই ভক্তকে তিনি বলেছিলেন, ‘ইটস হিলারি, বেবি’।
রিকি মার্টিন
‘হিস্পানিক আমেরিকানদের নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য রক্তে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো’ বলেছিলেন পুয়ের্তোরিকান এই শিল্পী। বিশেষ করে জর্জ র্যামোস নামের ইউনিভিশনের এক সাংবাদিককে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ’ প্রেস কনফারেন্স থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। মার্টিন লিখেছেন, জেনোফোবিয়াকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়ে আর মিথ্যা কথা বলে ট্রাম্প সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে চাইছেন, যা অত্যন্ত ঘৃণ্য।
ম্যাট ডেমন
ইএফইএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তাঁকে ‘জেনোফোবিক’, ‘বিরক্তিকর’ ও ‘অমানবিক’ বলে আখ্যায়িত করেন ‘দ্য মার্শিয়ান’ তারকা। তিনি বলেন, ‘সে (ট্রাম্প)আমাদের বর্ডারের দক্ষিণে থাকা প্রতিটা মানুষকে নিয়ে অমানবিক কথা বলছে, সে কথা বলছে আমার স্ত্রীকে নিয়ে, আমার সন্তানদের নিয়ে।’ উল্লেখ্য, ম্যাট ডেমনের স্ত্রী লুসিয়ানা ব্যারোসো জন্মসূত্রে আর্জেন্টাইন।
ব্রায়ান ক্রান্সটোন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণকে ‘অবসাদ দূর করে দেওয়ার মতো বিনোদন’ বলে অবহিত করেন ‘ব্রেকিং ব্যাড’খ্যাত তারকা। তিনি রসিকতায় আরো চড়া সুর দিয়ে বলেন, ‘এই লোক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলে ব্যাপারটা হবে খুবই ভয়াবহ কিন্তু তাঁর এই বেপরোয়া মনোভাব অন্য মানুষদের কিছুটা হলেও সৎ থাকতে উৎসাহ দেয়!’ ‘দ্য নার্ডিস্ট পডকাস্ট’-এর সাথে কথা বলার সময় এভাবেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি নিজের অনাস্থা প্রকাশ করেন এই অভিনেতা।
শাকিরা
কলাম্বিয়ান এই অভিনেত্রী যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী হবেন তা তো জানাই! নিজের বেশ কয়েকটি টুইটার বার্তায় বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন তিনি। যেখানে ট্রাম্পকে ‘হেইটফুল এবং রেসিস্ট’ বলার পাশাপাশি তিনি লেখেন যে, ‘এই শতাব্দীতে এসে কোনো মানুষেরই ট্রাম্পের মতো এই পরিমাণ অজ্ঞ হওয়া উচিত নয়।’
ইভা লঙ্গোরিয়া
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অ্যাডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন আমেরিকান অভিনেত্রী ইভা লঙ্গোরিয়া। তিনি বলেন, “আমি যেটা চিন্তা করি সেটা এই লোক বোঝে না এবং যেটা মানুষ বোঝে না তা হলো, এই ধরনের শব্দ এক ধরনের ‘আবেগের বিষ’ সৃষ্টি করে। হিটলার একটি জাতিকে শুধু শব্দ দিয়েই পরিচালনা করেছেন, শুধুই শব্দ।”
নেইল ইয়ং
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর একটি ক্যাম্পেইনে ‘রকিং ইন দ্য ফ্রি ওয়ার্ল্ড’ লাইনটি ব্যবহার করেন, যা কি না আবার কানাডিয়ান এই সংগীতশিল্পীর সৃষ্ট একটি গানের লাইন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়ংয়ের ম্যানেজার কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেইল ইয়ং একজন কানাডিয়ান নাগরিক এবং বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থক। সুতরাং আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র “বার্নি স্যান্ডার্সই ‘রক’ করতে পারবেন, অন্য কেউ নয়।”
রব স্নেইডার
একবার রব স্নেইডারের টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরে আসলেই বুঝতে পারবেন ট্রাম্পের ওপর কতটা বিরক্ত হলিউডের বহুমুখী এই প্রতিভা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে স্নেইডারের মূল সংঘাতের বিষয় ‘অভিবাসন’ নিয়ে ট্রাম্পের নীতি। হবেই বা না কেন! স্নেইডারের স্ত্রী প্যাট্রিশিয়াই যে মেক্সিকো থেকে আসা! এ ছাড়া ট্রাম্পের অনভিজ্ঞতারও সমালোচনা করেন এই অভিনেতা।
ফ্লো রিডা
ট্রাম্পের মালিকানাধীন মিস ইউএসএ নামক একটি শোর সাথে যুক্ত ছিলেন বিখ্যাত এই র্যাপার। ইমিগ্রেশন নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্যের পর তিনি অনুষ্ঠানটি বর্জন করেন এবং অনেক আগেই পরিকল্পিত এই শোতে শেষ পর্যন্ত অংশই নেননি। এ ছাড়া একই কারণ দেখিয়ে শো বর্জন করেন উপ-উপস্থাপক শেরিল বার্ক, থমাস রবার্টস, সাবেক মিস ইউনিভার্স জুল্যেকা রিভেরাসহ আরো অনেকেই।
বেকি জি
মেক্সিকান বংশোদ্ভূত এই শিল্পী সম্প্রতি ইউটিউবে একটি গান আপলোড করেন যার টাইটেল ‘উই আর মেক্সিকো’ এবং গানের বিস্তারিত অংশে লিখেন ‘এটা তোমার জন্য, ট্রাম্প’। গানের কথা তো আছেই, সাথে ট্রাম্পকে গানটি নিবেদন পরিষ্কারভাবেই বেকি জির ট্রাম্প-বিদ্বেষ প্রকাশ করে।