আমি শহীদুল জহিরের গল্পের ভক্ত : পরমব্রত
গত ২৩ এপ্রিল কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বাংলাদেশে এসেছেন। অনিমেষ আইচ পরিচালিত ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ ছবির শুটিং করার জন্যই তাঁর এই আগমন এবং এবারই প্রথম বাংলাদেশের কোনো ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি। ছবিতে পরমব্রতের বিপরীতে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী আশনা হাবিব ভাবনা। ২৩ এপ্রিল ছবির মহরত শেষে তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। ২৪ এপ্রিল থেকে এফডিসিতে সেট বানিয়ে ছবির শুটিং শুরু করেন পরিচালক অনিমেষ আইচ। টানা ছয়দিনের মধ্যে একদিন ছাড়া প্রতিদিন তাঁরা সেখানে শুটিং করছেন। আজ বুধবার, ২৯ এপ্রিল, সকাল থেকে এফডিসিতে শুটিং করছিলেন পরমব্রত ও ভাবনা। পড়ন্ত বিকেলে শুটিংয়ের ফাঁকে এফডিসিতে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন পরমব্রত ও অনিমেষ আইচ। খেলা শেষে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
প্রশ্ন : অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করছেন আজকাল। বাংলাদেশি শিল্পীদের নিয়ে চলচ্চিত্র করার ইচ্ছা আছে কি?
উত্তর : হ্যাঁ অবশ্যই আছে। শহীদুল জহিরের গল্পের অনেক ভক্ত আমি। তাঁর লেখা ও কাজের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। তাঁর গল্প এখন পড়ছি।
প্রশ্ন : এফডিসিতে আপনার ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ ছবির শুটিং হচ্ছে। এফডিসি-ভিত্তিক বাণিজ্যিক সিনেমার নায়ক শাকিব খানের ছবি কি দেখা হয়েছে?
উত্তর : না হয়নি। তবে আমি শুনেছি সে অনেক বড় মাপের তারকা।
প্রশ্ন : এবার আসি পশ্চিমবঙ্গের তারকা প্রসঙ্গে। রাইমা সেনের সঙ্গে পর্দায় আপনার রসায়ন চমৎকার। এর রহস্য কী?
উত্তর : পর্দায় সবার সঙ্গে রসায়নটা চমৎকার। পশ্চিমবাংলার সব শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছি। পায়েল, পাওলি, কোয়েল সবার সঙ্গেই কাজ করেছি। রাইমার সঙ্গে দেশে ফিরে আর একটি কাজ শুরু করতে যাচ্ছি।
প্রশ্ন : রাইমা সেনের সম্পর্কে এমন কিছু বলুন, যা আমরা জানি না। মানে কোনো মজার সিক্রেট?
উত্তর : রাইমা যেকোনো পূর্ণবয়স্ক জোয়ান পুরুষের থেকে বেশি খাবার খায়। প্রচণ্ড খেতে পারে সে।
প্রশ্ন : এবার আসি চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় ছবি হচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
উত্তর : এটি খুবই ভালো কথা। যৌথ প্রযোজনার ছবি হওয়া ভালো। এটা খুব দরকার। আমরা ওই বাংলায় যে ছবিগুলো বানাচ্ছি সেগুলোর একটা বড় দর্শক আমরা ওখানে হারাচ্ছি আর এখানে যে নাটক ও ছবিগুলো হচ্ছে সেগুলো ওখানে পাচ্ছি না। তবে আমি বলব, ভারতীয় বাংলা ইন্ডাস্ট্রি যেহেতু বড়, একটা সম্ভাবনা আছে ব্যাপারটা এক তরফা হয়ে যাওয়ার। এটা হওয়াটা ঠিক হবে না। আমি নিজে ভারতীয় হওয়ার পরও বলছি, ভারতের ছবি যদি এখানে মুক্তি পায় তাহলে এখানকার ছবিও ওপার বাংলায় মুক্তি পাওয়া উচিত। দুটো জায়গা যেন সমান সমান থাকে।
প্রশ্ন : আপনি কি যৌথ প্রযোজনায় ছবি বানাতে চান?
উত্তর : আমি ভীষণভাবে বানাতে চাই। গৌতম ঘোষ ছাড়া এখন পযর্ন্ত যৌথ প্রযোজনার যেসব ছবি হয়েছে সেগুলো তামিল ছবির রিমিক বলা যায়। সে রকম ছবি বানাতে চাই না। বাংলাদেশ ও ভারত তো একটা দেশই ছিল। ইতিহাস সূত্রে আমাদের পারস্পরিক যে যোগাযোগ সেই সূত্র টেনে কোনো ছবি বানাতে চাই। যে ছবি আমাদের বর্তমান সময়ের কথা বলে, যে ছবি ইতিহাসের কথা বলবে, সে ধরনের ছবি নির্মাণ করতে চাই। যে ছবির একটা গুরুত্বরপূর্ণ অর্থ থাকবে।
প্রশ্ন : সুমন ঘোষ পরিচালিত ‘কাদম্বরী’ নামের একটি ছবিতে আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চরিত্রে অভিনয় করছেন। রবীন্দ্রনাথের ভূমিকায়, নিজেকে তৈরি করেছেন কীভাবে?
উত্তর : বুঝতে পারেন নিজেকে রবীন্দ্রনাথ ভাবতে একটু বাড়াবাড়ি লাগে। অতুক্তি মনে হয়। সুমনের বক্তব্য- যে কারণে আমাকে ছবিতে নেওয়া হয়েছে তা হলো রবীন্দ্রনাথের চোখের সঙ্গে আমার চোখের মিল নাকি আছে! চোখে নাকি রবীন্দ্রনাথের ভাব চলে আসে। ছোটবেলায় আমার চুল, দাঁড়ি লম্বা লম্বা ছিল তখন আমার এক বান্ধবী আমাকে রবীন্দ্রনাথ বলে ডেকেছিল। আমাকে একদিন ও ডেকে বলল, ‘এই তুই না অল্প বয়সী রবীন্দ্রনাথের মতো দেখতে।’ তখন এটা শুনে আমি একটু ধাক্কা খেয়েছিলাম। আরে বাবা, বলে কী!
প্রশ্ন : ‘রবীন্দ্রনাথ’ আজ শুটিংয়ের ফাঁকে ক্রিকেট খেললেন। বাংলাদেশের খেলা কেমন লাগে?
উত্তর : কলকাতায় ভারত ছাড়া একমাত্র বাংলাদেশ খেললে আমি বাংলাদেশকে সমর্থন করি। শুধু আমি না পুরো কলকাতা বাংলাদেশকে সমর্থন করে। লোকে চায় বাংলাদেশ জিতুক। বর্তমান বাংলাদেশ দলকে আমার ভীষণ ভালো লাগে। অনেক চমৎকার। আমি খুব ভক্ত তাদের খেলার। সাকিব কলকাতায় খুব বড় স্টার। আমাদের হয়ে সে আইপিএলে খেলে। আমারও খুব পছন্দ সাকিবকে। সৌম্য সরকার, মাহামুদউল্লাহ্ অনেক বড় ব্যাটসম্যান। রুবেলের বোলিং আমার খুব ভালো লাগে। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় বিরাট কোহেলীর সঙ্গে রুবেলের যে বাগ্বিতণ্ডা হলো আমার খুব মজা লেগেছিল। ভারতে ধনির খেলার আমি অনেক ভক্ত। মোহাম্মদ সামির খেলাও ভালো লাগে। অবসরে আমিও ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি।