যে ১০টি লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন
মানবদেহের জন্য ক্যালসিয়াম অন্যতম খনিজ। এটি হাড়, হৃদয়, পেশী এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য অত্যাবশ্যক। শরীরের প্রতিটি কোষের ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। রক্তে মাত্র ১% ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, বাকি ৯৯% হাড় এবং দাঁতে জমা হয়।
✿ পেশীতে টান
ক্যালসিয়ামের ঘাটতির প্রধান উপসর্গ হল পেশীতে টান এবং খিঁচুনি। ক্যালসিয়াম পেশী সংকুচিত করে। এটি পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের অভাবে পেশী দুর্বলতা হতে পারে।
✿ অসাড়তা
ক্যালসিয়ামের গুরুতর অভাবে অসাড়তা সৃষ্টি হতে পারে। শরীরের প্রতিটি স্নায়ু কোষের ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। এর অভাবে স্নায়ু কোষগুলি সংবেদন নিবন্ধন করতে এবং সংকেত পাঠাতে লড়াই করে।
✿ ক্লান্তি অনুভব করা
‘হাইপোক্যালসেমিয়া’ ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু পেশী ফাইবার এবং স্নায়ুতে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। তাই এর অভাবে কোষের ক্ষয় হওয়া শুরু হয়। এটি শরীরকে ক্লান্তি এবং দুর্বলতার দিকে ঠেলে দেয়।
✿ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হাইপোক্যালসেমিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণ। এটি গুরুতর হলে জীবন হুমকি হতে পারে। হৃৎপিণ্ড একটি পেশী। যদি হৃদপিন্ডের কোষগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম না পায়, তবে তারা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এটি হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দকে বন্ধ করে দিতে পারে। হৃৎপিণ্ডের পেশীতে খিঁচুনি সৃষ্টি করতে পারে। এর ধমনীগুলোকে সংকুচিত করে।
✿ খিঁচুনি
মস্তিষ্কের কোষগুলির নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণ করার জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। ক্যালসিয়ামের অভাব হলে মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত উত্তেজিত করে। এগুলো খিঁচুনির সৃষ্টি করতে পারে।
✿ অস্টিওপোরোসিস
অস্টিওপোরোসিস বা ভঙ্গুর হাড়কে ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত ব্যাধি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে, ক্ষতিপূরণের জন্য শরীরের হাড় থেকে ক্যালসিয়াম নেওয়া হয়। সময়ের সাথে সাথে, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হাড়ের চরম দুর্বলতা ও ভঙ্গুরতা বাড়ায়।
✿ শুষ্কতা অনুভব করা
ক্যালসিয়াম ত্বকের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। এর ঘাটতি থাকলে এটি ত্বকের পিএইচ লেভেল কমিয়ে ফেলে। ত্বক আর্দ্রতা বজায় রাখতে পারে না।
✿ বিভ্রান্তি এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাস
বিভ্রান্তি, এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাস হাইপোক্যালসেমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কোষ ক্যালসিয়ামের উপর নির্ভর করে। স্নায়ু কোষে প্রবেশ করা ক্যালসিয়াম নিউরোট্রান্সমিটারের মুক্তিকে উদ্দীপিত করে। ক্যালসিয়ামের অভাব জ্ঞানীয় কার্যকারিতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
✿ দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগ
ক্যালসিয়াম দাঁত মজবুত রাখে। খাদ্য, পানী এবং মুখের ব্যাকটেরিয়া দাঁতের খনিজ পদার্থকে ক্ষয় করতে পারে। এই খনিজ ক্ষয় রোধ করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মাড়ির রোগের অন্যতম কারণ।
✿ রিকেটস
ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের রিকেট হতে পারে। এর অভাব হাড়ের সঠিক খনিজকরণে বাধা দেয়। যা একটি ক্রমবর্ধমান শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের হাড় দুর্বল এবং নরম হয়ে যায়।
সূত্র- সেলফ ডিকোড