ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে চর্বি?
সাধারণত চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাবারের কথা শুনলেই মনে হয় এই বুঝি ওজনটা বেড়ে গেল। কিন্তু তা নয়। ভালো কিছু চর্বিও রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ইয়াহু হেলথ জানিয়েছে এমন কিছু চর্বি বা ফ্যাটের নাম।
নারিকেল তেল
সাধারণত চর্বির প্রধান কাজ শরীরে শক্তি জোগানো। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে মাংসের চর্বি থেকে নারিকেলের তেল অনেক উপকারী। এটি বেশ স্বাস্থ্যকর। এতে রয়েছে লিউরিক এসিড যা অন্যান্য চর্বির তুলনায় দ্রুত শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। নারিকেল তেল গ্রহণ শরীরের কর্মক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তোলে।
এই তেল আপনি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে পারেন। মাখন হিসেবে, কোনো কিছু বেক করতে, বিস্কিট এবং কেক বানাতেও ব্যবহার করতে পারেন এই তেল।
চিনাবাদামের তেল
এই তেলে রয়েছে এক ধরনের এসিড, যা ক্ষুধা কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই চর্বি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন ধরনের ভাজার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করতে পারেন। যেই খাদ্য উচ্চতাপে রান্না করতে হয় এর মধ্যেও চিনাবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি নিজেও ভেবে নিন না কী কী তৈরি করতে পারেন এটি দিয়ে!
আভাকাদোর তেল
আভাকাদোর তেল হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো। এটি কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ই এবং পটাসিয়াম।
এটাকে সালাদ বানানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। মাছ রান্না এবং বাড়িতে পিজা তৈরির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারেন এটি। বিভিন্ন ধরনের ফলের সালাদ বানানোর জন্যও এই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
ম্যাকাডামিয়ার তেল
৮০ শতাংশ ম্যাকাডামিয়া তেলের মধ্যে রয়েছে মোনো আনসেচুরেটেড এবং উচ্চ পর্যায়ের ওমেগা-৩ এসিড। এটি শরীরের সাইটো সটেরোলসের বড় উৎস। এই তেল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
রান্নার সময় বিভিন্ন ধরনের ভাজা খাবার তৈরিতে এই তেল ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া যেসব খাবার ওভেনে তৈরি করতে হয় সেসব খাবারেও এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।
জলপাইয়ের তেল
জলপাইয়ের তেল রক্তের সেরোটোনিনকে কমায় এবং শরীরে হরমোনের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং পলিফেনলস। জলপাইয়ের তেল ক্যানসার ও অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া রোধ করে।
বিভিন্ন ধরনের সালাদ ও তরকারি রান্নার সময় এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে প্রতিদিনের রান্নার জন্য অল্প পরিমাণ তেল ব্যবহার করতে হবে।
আখরোটের তেল
গবেষণায় দেখা গেছে, এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই তেল শরীরের ক্যালোরি পোড়ায় এবং মেটাবোলিক পদ্ধতি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। অন্যান্য বাদামের তেলের তুলনায় আখরোটের তেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বেশি রয়েছে।
এই তেল সালাদ তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। তবে এই তেল অতিরিক্ত আগুনে রান্না করা যাবে না।
সরিষার তেল
সরিষার তেলে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাট। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। যেমন: হাঁপানি,ক্যানসার ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা যায়।
তিসির তেল
তিসির তেল সাধারণত ছবি আঁকার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তবে এই তেল খাবার হিসেবেও কিন্তু বেশ ভালো। এর মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করে।
তবে আগুনের তাপে এই তেল ব্যবহার না করাই ভালো। এটি বিভিন্ন ধরনের সালাদ তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। জলপাইয়ের তেলের সঙ্গে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।