খালি পেটে আইসক্রিম খাবেন না
অনেকেই দুধকে ‘না’ বলেন, তবে আইসক্রিমকে কখনো ‘না’ বলেন না। আইসক্রিমের মূল উপাদান দুধ। তাই প্রোটিনের পরিমাণ এতে বেশি। এ ছাড়া বেশির ভাগ আইসক্রিমে থাকে প্রচুর ফ্যাট ও ক্যালরি।
দুধ ছাড়াও আইসক্রিম রয়েছে। একে বলে শেরবাট (sherbet)। আবার আমাদের দেশের ললি আইসক্রিম দুধ ছাড়া। আইসক্রিম যেমন হোক, বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়া বা রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া বেশি খেলে ঠান্ডা-কাশির সমস্যা হতে পারে। তাই অনেক প্রিয় এই আইসক্রিমকে পুষ্টিবিদরা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
তাই বলে এত মজার একটি খাবার একেবারেই বাদ দেবেন? চলুন জেনে নেই, কীভাবে আইসক্রিম খেলে ক্ষতি কিছুটা কমানো যাবে।
১. খালি পেটে না খেয়ে দুপুর বা রাতের খাবারের পর আইসক্রিম খাওয়া যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে খাবার একটু কম পরিমাণে খেয়ে আইসক্রিম উপভোগ করুন।
২. আইসক্রিমের সঙ্গে চকলেট চিপস, কুকিজ, সিরাপ বা এক্সট্রা কোনো টপিং নেবেন না। এগুলো নিলে ক্যালরি ও ফ্যাট অনেক বাড়বে।
৩. কোন বা কাপের মধ্যে কাপ বেছে নিন, তাতে ক্যালরি কমবে।
৪. এক স্কুপের বেশি স্কুপ নেবেন না। বেশি নিলে ফ্যাট ও ক্যালরি অনেক বেশি গ্রহণ করা হয়।
৫. ক্রিমজাতীয় আইসক্রিমের তুলনায় শেরবাট বা ললি আইসক্রিমে ফ্যাট প্রায় নেই বললেই চলে। এ ছাড়া ক্যালরিও প্রায় ৬০ ভাগ কম থাকে। তাই ঠান্ডা আইসক্রিম খেতে মন চাইলে ললি খাওয়া যেতে পারে।
৬. আইসক্রিমের সঙ্গে ফল মিশিয়ে খেলে খাওয়া কম হয় এবং সেই সঙ্গে ফলের পুষ্টিও পাওয়া যায়।
৭. দইয়ের সঙ্গে যেকোনো ফল ব্ল্যান্ড করে, বরফ জমানোর ছাঁচে রেখে বরফ করুন। যখন আইসক্রিম খেতে মন চাইবে, তখন একটি টুকরা মুখে নিয়ে চুষে চুষে খান। এতে ফ্যাট ও ক্যালরি কম খাওয়া হবে, আবার স্বাস্থ্যকরও হবে।
৮. আইসক্রিম খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করুন।
৯. চকলেট বা বিস্কুটযুক্ত (যেমন—চকবার, কোন ইত্যাদি) আইসক্রিম না খেয়ে, প্লেইন আইসক্রিম (যেমন—ভ্যানিলা বা ম্যাংগো) আইসক্রিম খাওয়া ভালো।
১০. বড় কামড় না দিয়ে বা বড় চামচে না নিয়ে ছোট চামচে বা জিহ্বা দিয়ে আস্তে আস্তে আইসক্রিম উপভোগ করুন।
১১. ফলের রস জমিয়ে ঘরে বরফ আইসক্রিমও খেতে পারেন।
ওপরের পরামর্শগুলো মেনে আইসক্রিম খেলে ক্ষতি হয়তো কিছুটা কমবে। তবে মনে রাখবেন, এই পরামর্শ প্রতিদিনের জন্য নয়। মাসে দুই বা তিনবার এমন করে আইসক্রিম খাওয়া যেতে পারে। একগ্লাস ঠান্ডা পানিতে একটু লেবু, পুদিনা আর বরফ দিয়ে খেলে আইসক্রিম খাওয়ার নেশা কমে যাবে।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।