ক্রিম কেক যেভাবে খাওয়া ভালো
জন্মদিন মানে যেন কেক কেটে পালন করা। তবে আজকাল শুধু জন্মদিনেই কেক কাটা হয় না, বরং যেকোনো অনুষ্ঠানের কারণে, এমনকি অকারণেও কেক খাওয়া হয়ে থাকে। কেক অনেক মানুষের কাছে প্রিয় একটি মিষ্টান্ন।
কেকের মূল উপাদান দুধ, ময়দা, চিনি, মাখন, ডিমসহ আরো নানা কিছু। তাই কেক থেকে প্রচুর ক্যালোরি, প্রোটিন ও চর্বি পাওয়া যায়। কেকে চর্বির পরিমাণ অনেক বেশি। বেশি কেক খেলে তাই ওজন বেড়ে যাওয়া বা রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই অনেক প্রিয় এই কেককে পুষ্টিবিদরা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
তাই বলে এত মজার কেক একেবারেই খাব না? চলুন জেনে নেই কিভাবে কেক পরিমিত খেলে তাতে ক্ষতি কিছুটা কমানো যাবে।
১. খাবার খাওয়ার পর কেক খেলে অন্য মিষ্টান্ন খাবেন না।
২. কেক কেনার সময় কেকের ওপর বাড়তি বিস্কুট, টপিং, চকলেট ইত্যাদি এড়িয়ে গিয়ে যথাসম্ভব সাধারণ কেক কিনবেন।
৩. হালকা এক লেয়ারের ক্রিমযুক্ত কেক খাবেন।
৪. বাড়তি ক্রিম চামচ দিয়ে সরিয়ে তারপর কেক খাবেন। এতে কিছুটা মজা কম লাগলেও, চর্বি ও ক্যালোরি অনেক কম গ্রহণ হয়।
৫. কেকের বিভিন্ন রকম রং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কেননা রং আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে। তাই যথাসম্ভব এক বা দুইটা হালকা রঙের কেক বেছে নিন।
৬. কেকের ওপর ক্রিম না হয়ে ফল থাকলে তা অনেকাংশে ভালো। এতে কেকের সঙ্গে ফলের পুষ্টিও পাওয়া যায়।
৭. কেক হাতে নিয়ে বড় কামড় না দিয়ে প্লেট এ নিয়ে চামচ দিয়ে অল্প অল্প করে আস্তে আস্তে খাবেন। এতে পরিমাণে অনেকটাই কম খাওয়া হয়। এতে চর্বি ও ক্যালরিও কম খাওয়া হবে।
৮. কেক খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করুন।
৯. কেক ছোট ছোট টুকরা করে খেলে তা সবার জন্যই ভালো। এতে সবাই কেকের স্বাদ পায় এবং পরিমিত খাওয়ার কারণে সেটি স্বাস্থ্যকর হয়।
১০. কেকের নকশার জায়গায় বেশি ক্রিম থাকে, তাই এই অংশ এড়িয়ে চলুন। তবে বাচ্চারা খেতে পারবে।
১১. ফ্লেভারের ক্ষেত্রে ভ্যানিলা কেক ভালো।
১২. জটিল নকশার কেকে বেশি ক্রিম ও উপাদানের ব্যবহার হয়। তাই চারকোণা বা গোল ধরনের সাধা্রণ নকশার কেকই ভালো।
১৩. পনিরযুক্ত কেকে বেশি চর্বি থাকে। এটি খুব বেশি ক্যালোরিবহুল। তাই এই জাতীয় কেক না খাওয়াই ভালো।
ওপরের পরামর্শগুলো মেনে কেক খেলে তাতে ক্ষতি হয়তো কিছুটা কমাবে। তবে মনে রাখবেন এই পরামর্শ প্রতিদিনের জন্য নয়। মাসে এক বা দুইবার এমন করে কেক খাওয়া যেতে পারে। নিজেকে বিরত রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, কেক যেখানে রয়েছে সেই জায়গা থেকে সরে যাওয়া।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল