অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের কারণ কী?
অতিরিক্ত উদ্বেগের সমস্যাকে অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার বলা হয়। এর কারণ কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০১৭তম পর্বে কথা বলেছেন সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহিদ।
বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের কোনো কারণ রয়েছে কী?
উত্তর : বড় পরিসরে বলছি। তবে এর মধ্যেও কিছু ধরন রয়েছে। অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে যদি জেনারালাইজড অ্যাংজাইটি হয়, তাহলে দেখা যাবে প্রতিটা ছোট ছোট ক্ষেত্রে সে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে, সেটি কাজের ক্ষেত্রে হোক, বাসার ক্ষেত্রে হোক, খুঁটিনাটি যেকোনো বিষয়ে সে উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন।
নির্দিষ্ট যদি কোনো উদ্বেগ হয়, তাহলে ফোবিয়া হতে পারে। ফোবিয়ার আবার বিভিন্ন ধরন রয়েছে। ক্লাস টু ফোবিয়া। যেমন বদ্ধ জায়গায় তিনি ভয় পান, লিফটে উঠতে ভয় পান, এরপর এগারো ফোবিয়া রয়েছে, মানে অনেক মানুষের মধ্যে তিনি ভয় পান। অনেক সময় ওসিডিও অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের মধ্যে পড়ছে। এটি হলো অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার, শুচি বায়ুগ্রস্ততা। একটি জিনিস বার বার চিন্তা হচ্ছে। সেই চিন্তাগুলো অনেকটা যুক্তিহীন। তিনি বোঝেন এগুলোর ভিত্তি নেই, তবে থামাতে পারেন না। যখন হয়, ভীষণ অস্বস্তিবোধ করেন। সেটা থামাতে গিয়ে দেখা যায় বার বার হাত ধুচ্ছেন, বার বার একটি জিনিস চেক করছেন। কিংবা মনে করছেন এই বিষয়টা বার বার গণনা করলে আমার মাথা থেকে চলে যাবে।
এ ছাড়া আরো রয়েছে এক্সাম ফোবিয়া ( পরীক্ষা ভীতি)। ঠিক পরীক্ষার সময় তার দুশ্চিন্তা বাড়ছে বা উদ্বেগ বাড়ছে। হয়তো তার প্রস্তুতি অনেক ভালো- সেটি থেকে সমস্যা হতে পারে। আবার হয়তো ভালো নয়- সেটি থেকেও হতে পারে। এখানে অবস্থার চেয়ে সে যেভাবে চিন্তা করছে, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে খুব নেতিবাচকভাবে দেখে। ভাবে, আমি মনে হয় পারবো না।
সাধারণত ভবিষৎ নিয়ে যদি দুশ্চিন্তা করা হয়, তাহলে এমন হতে পারে। যেমন পরীক্ষা সামনে, সে ভাবছে আমি মনে হয় পারবো না। কিংবা আমার মনে হয় শরীর দিন দিন খারাপ হয়ে যাবে। আমার মনে হয় খারাপ একটি রোগ ধরা পড়বে। অনেক সময় মৃত্যু চিন্তা চলে আসে।কিংবা যেকোনো সময় মারা যাবো। যেমন প্যানিক ডিজঅর্ডার। এটিও অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারের মধ্যে পড়ছে। এই যে বিষয়গুলো সেগুলো বর্তমানকে নিয়ে না বা অতীতকে নিয়ে না। যেটা হয়নি, সেটাই আগে ভেবে ফেলছি। অতিরিক্ত ভেবে ফেলছি। এবং নেতিবাচকভাবে ভাবছি। ইতিবাচকভাবে ভাবলে তো এগিয়ে নিবে। তবে এটা নেতিবাচকভাবে নিচ্ছে।তখনই চিকিৎসার প্রয়োজন।