প্রভাতফেরিতে যেতে কী করবেন ও খাবেন
আগামীকাল একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অনেকেই কাল ভোরে উঠে প্রভাতফেরিতে যাবেন বলে মনস্থির করেছেন। পরিবারের ছোট-বড় সবাই চায়, প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে। কিন্তু এ জন্য কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
এতে আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা সুস্থ ও ভালোভাবেই কাটাতে পারবেন ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটি। চলুন জেনে নিই, প্রভাতফেরিতে যাওয়ার প্রস্তুতি কেমন হবে এবং ওই দিনটিতে আপনার খাওয়াদাওয়াই বা কেমন হবে।
প্রভাতফেরির প্রস্তুতি
• একুশে ফেব্রুয়ারি যেহেতু খুব ভোরে প্রভাতফেরিতে যেতে হয়, তাই প্রস্তুতি শুরু হবে তার একদিন আগে থেকেই। আর যাঁরা ২১ তারিখ রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই প্রভাতফেরিতে যেতে চান, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে আরেকটু আগে থেকে।
• ২০ তারিখ খুব হালকা খাবারদাবার খাবেন, যাতে শরীরে কোনো রকম সমস্যা দেখা না যায়। রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে হবে, যাতে কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘণ্টা খুব ভালো ঘুম হয়। এতে আপনি খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুম থেকে উঠে প্রভাতফেরিতে যেতে পারবেন।
• রাতে ঘুমানোর আগে আপনার কাপড়চোপড় গুছিয়ে রাখবেন, সেই সাথে জুতো ও সানগ্লাস গোছাতে ভুলবেন না। ঘড়িতে অবশ্যই অ্যালার্ম দিয়ে রাখবেন, যেন সঠিক সময় ঘুম ভাঙে এবং কোনো তাড়াহুড়ো করতে না হয়।
• খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা নাশতা খেয়ে নিন। এ ক্ষেত্রে দই-চিড়া, দুধ, রুটি-সবজি, কলা-বিস্কুট, রুটি-সুজি বা রুটি-জ্যাম-ডিম ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
• ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সানব্লক ক্রিম লাগাতে ভুলবেন না। সানব্লক আপনার সারা দিনের দৌড়ঝাঁপে ত্বককে সুরক্ষা দেবে ।
• প্রভাতফেরিতে যেতে একটি ব্যাগ নিতে পারেন। আর তাতে অবশ্যই একটি পানির বোতল নেবেন। বাইরের পানি না খাওয়াই ভালো। ব্যাগের ভেতর টিস্যু, সানগ্লাস ইত্যাদি মনে করে ঢুকিয়ে নেবেন।
• এখনকার আবহাওয়ায় ধুলোবালু বেশি হয়, তাই বাইরে বের হলে মাস্ক অবশ্যই সাথে রাখবেন।
• এদিন জুতো ব্যবহারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। জুতো যেন অবশ্যই অনেক আরামদায়ক হয়। কেননা প্রভাতফেরিতে খালি পায়ে হাঁটার পর বাড়ি ফেরার সময় আপনাকে জুতো পরেই বাড়িতে ফিরতে হবে। তাই নরম, আরামদায়ক জুতো, সুতির মোজা সাথে রাখাই ভালো।
খাওয়াদাওয়া
• ২০ তারিখ রাতে অবশ্যই হালকা খাবার খাবেন। খুব তেল মসলা, ভাজাপোড়া খাবার বর্জন করুন। চেষ্টা করুন রাতের খাবারটি খুব তাড়াতাড়ি সেরে নেওয়ার। রাত ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে রাতের খাবার সেরে নিলে ভালো। তাহলে ২১ তারিখ মাঝরাতেই প্রভাতফেরিতে যেতেও সমস্যা মনে হবে না।
• একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে হালকা খাবার খেয়ে নিন যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। কোনোভাবেই খালি পেটে বের হবেন না।
• প্রভাতফেরি থেকে ফেরার পর ফলের রস, ডাবের পানি ও বিস্কুট বা হালকা কিছু খাবার খাবেন।
• এদিন দুপুরে ভাত, মাছ, ডাল, সবজিজাতীয় সাধারণ খাবারগুলোই বেশি স্বাস্থ্যকর হবে। খাবারের পর হজমের জন্য দই খাওয়া যেতে পারে।
• ওই দিন ছুটির দিন বলে বিকেলে ঘুরতে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই বাইরের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন। ফাস্ট ফুড খেতে চাইলে ভাজাপোড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে ফ্রাইয়ের পরিবর্তে গ্রিল, কোলাজাতীয় পানীয়র বদলে ফলের রস বা দুধ পান করুন। চা, চিপসের পরিবর্তে পপকর্ন বা বাদাম ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। বিকেলে এই খাবারের পর পানি ঠিকমতো খেতে ভুলবেন না।
• রাতে হালকা খাবার যেমন স্যুপ-ব্রেড, রুটি-মাংস-সবজি, ভাত-সবজি-মাংস ইত্যাদি অল্প পরিমাণে খাবেন। রাতে শোবার আগে দুধ খেয়ে নিলে রাতে ঘুমটা ভালো হবে।
রাতে একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলে ভালো কেননা সারা দিনের ঘোরাঘুরির পর ক্লান্ত দেহকে একটু বিশ্রাম দিলে পরদিন নতুন উদ্দীপনায় দিনটি সুস্থভাবে শুরু করতে পারবেন।
তামান্না চৌধুরী : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।