যেসব খাবার এড়িয়ে যাবেন
ভালো স্বাদ আর সুগন্ধ না হলে আমরা হরহামেশাই হয়তো কিছু খাবার এড়িয়ে চলি। তবে খাবার রোগ বাড়িয়ে দিতে পারে- এটা ভেবে খাওয়া বাদ রেখেছেন, এমনটা কমই দেখা যায়। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো প্রকৃতই আপনার শরীরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। কাজেই সেসব খাবার না খাওয়াই ভালো- এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা। নারী স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওইমেনহেলথ দিয়েছে এই তথ্য।
সোর্ড মাছ
মাউন্ট সিনাই স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক ফিলিপ ল্যান্ডরিগান জানান, যেসব নারীরা সন্তান সম্ভবা তাদের অবশ্যই সোর্ড মাছ এড়িয়ে যাওয়া উচিত। সোর্ড মাছে ভারী ধাতব পদার্থ থাকে। এর মধ্যে থাকা নিউরোটোক্সিন গর্ভে শিশুর বৃদ্ধিকে ব্যহত করতে পারে। এটি হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী। তাই স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সোর্ড মাছ এড়িয়ে ওমেগা–৩ ফ্যাটি এসিড সম্বৃদ্ধ মাছ খাওয়ার অভ্যাস করুন। যেমন : টুনা মাছ, আলাস্কার বন্য স্যামন, ব্ল্যাক কোড মাছ ইত্যাদি।
ননঅরগানিক স্ট্রবেরি
ফিক্সডফুড ওআরজির প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট কেনার জানান, স্ট্রবেরি চাষে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এসব কীটনাশক মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত এসব স্ট্রবেরি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো; যদিও এগুলো বেশ মুখরোচক।
খাবার সোডা
যেকোনো ধরনের ডায়েট সোডা অথবা খাবারের সোডা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। গবেষণায় বলা হয়, এই সোডা শরীরে মেটাবোলিজমে সমস্যা তৈরি করে। ওজন বাড়ানো, গাঁটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, বিষণ্ণতা, পেটের প্রদাহ, ক্যানসার ইত্যাদি বিভিন্ন রোগের কারণও এই ডায়েট সোডা। গবেষকরা আরো বলেন, এর বদলে গ্রিন টি বা বিভিন্ন ধরনের চা পান করার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
ফাস্ট ফুড
গবেষকরা জানান, ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। সাধারণত ফাস্ট ফুড বেশি তেল দিয়ে তৈরি হয় এবং এতে কৃত্রিম চিনিও ব্যবহার করা হয়। এসব খাবার তৈরিতে যে ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয় তা মানবদেহের জন্য অপকারী। তাই ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন। ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
টিনের টমেটো
ক্যানজাত টমেটোর মধ্যে রয়েছে বিসফেনল-এ অথবা বিপিএ। এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ওজনাধিক্যের জন্য দায়ী। বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে এটি খুবই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই টিনের পাত্রের টমেটো এড়িয়ে গ্লাসের বোতলের টমেটো গ্রহণ করা যেতে পারে।
পাউরুটি
ওয়েট বেলি টোটাল হেলথ বইয়ের লেখক ও কার্ডিওলজিস্ট উলিয়াম ডেভিস জানান, পেটের সমস্যা, এসিডিটি বৃদ্ধি, ওজনাধিক্য, অ্যাজমা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য অনেকাংশে আপনি দায়ী করতে পারেন পাউরুটিকে, যদি আপনি প্রতিদিন সকালেই এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
ভুট্টা
ভুট্টা চাষেও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক দ্রব্যগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যেগুলো খুব ধীর গতিতে আমাদের শরীরে প্রভাব ফেলে। তাই প্রক্রিয়াজাত ভুট্টা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
সাদা চকোলেট
চকোলেট কেবল মিষ্টির উৎসই নয় এটি মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও ভালো। গবেষকরা বলেন, সাদা চকোলেট দেহের কোনো কাজেই আসে না। অন্যান্য চকোলেটের মতো মস্তিস্কে রক্তের প্রবাহ, ধমনীকে রক্ষা করা এসবের কোনো গুণই নেই এর মধ্যে। তাই সাদা চকোলেট এড়িয়ে কালো চকোলেট খাওয়া যেতে পারে।
কৃত্রিম মিষ্টান্ন
গবেষকরা জানান, কৃত্রিম মিষ্টান্ন শরীরে রক্তের শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ক্যান্ডি এবং যেসব চুইঙ্গামে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। এগুলোতে যে ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় সেগুলো নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। এগুলো দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই এসব এড়িয়ে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন মিষ্টি খান। যেমন- মধু, ছানা ইত্যাদি।
প্রক্রিয়াজাত হ্যামবার্গার
গবাদি পশুকে তরতাজা করতে বেশির ভাগ খামারেই বিশেষ হরমোন ঢুকানো হয় শরীরে এবং খাবারও দেওয়া হয় বিশেষ রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে। কাজেই এই পশুর মাংস, ঘাস খাওয়া পশুর মাংসের চেয়ে আলাদা এবং খারাপ হবে সেটাই স্বাভাবিক। বার্গারে যে মাংস ব্যবহার করা হয় সেগুলো কিন্তু বেশির ভাগই খামার থেকে প্রক্রিয়াজাত হয়ে আসা মাংস। আর তারচেয়েও বড় বিষয় আপনার পেটে যে হ্যাম যাচ্ছে সেখানে একটি পশুর মাংস কিমা নেই, আছে বিভিন্ন পশুর মাংসের কিমা, এতে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ইউএসডিএর বিজ্ঞানীরা হ্যাম পরীক্ষা করে দেখেছেন এসবের ৫০ শতাংশেরও বেশি হ্যামে রয়েছে রোগজীবাণু বহনকারী ব্যাকটেরিয়া।
মাখন গন্ধের মাইক্রোওয়েভ খই
গবেষণায় বলা হয়, মাখনের গন্ধযুক্ত খই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়াই ভালো। কেননা এখানে কৃত্রিম গন্ধ যোগ করা হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই হানিকর।