গর্ভকালীন ব্যায়াম
অনেকের ধারণা গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা যায় না বা এ সময় ব্যায়াম করা ঠিক নয়। বরং এই সময় যত বেশি কর্মক্ষম থাকা যায় তত ভালো। আসুন জেনে নেই গর্ভকালীন ব্যায়াম কেন জরুরি এবং কী ধরনের ব্যায়াম এ সময় করা যাবে।
গর্ভকালীন ব্যায়াম কেন প্রয়োজন
গর্ভকালীন ব্যায়াম মা ও শিশুর রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। পা ও কোমড় ব্যথায় সাহায্য করে। মাংসপেশি শিথিল করে। কাজে উদ্দম আনে। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। ভালো ঘুমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এ সময় শারীরিক এবং মানসিক কারণে বিভিন্ন অস্থিরতা কাজ করে। এটি দূর করতেও সাহায্য করে ব্যায়াম। এ ছাড়া পায়ের রক্তনালি ফুলে উঠা দূর করে এবং স্বাভাবিক প্রস্রাবে সাহায্য করে।
ব্যায়ামের আগে সতর্কতা
ব্যায়াম শুরুর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার গর্ভাবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ কি না। নানা কারণে চিকিৎসক আপনাকে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলতে পারেন। তখন ব্যায়াম করা যাবে না। আগে থেকে যদি ব্যায়ামের অভ্যাস থাকে তবে তা চালিয়ে যেতে পারেন। তবে পেটের ওপর যেন চাপ না পড়ে সে বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। পেটের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। বিশেষ করে প্রথম তিন মাস। একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধায়নে শরীরচর্চা করা ভালো। ব্যায়ামের সময় হালকা ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরে নেবেন।
প্রথমে হালকা ধরনের ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে হবে। অস্থির কিংবা খারাপ লাগলে ব্যায়াম করা যাবে না।
যে অবস্থায় শরীরচর্চা নিষেধ
উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত শূন্যতা, হৃদপিণ্ড বা ফুসফুসে রোগ থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না। গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে, ফুল নিচের দিকে থাকলে এবং প্লাসেটা প্রিভিয়া থাকলে ব্যায়াম নিষেধ করা হয়। আগে গর্ভপাত হওয়ার ইতিহাস থাকলেও ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। ড্রাইভিং, জিমন্যাস্টিক, হকি খেলা, সাইকেল চালানো যাবে না।
শরীর ফিট রাখতে যেসব ব্যায়াম করা যেতে পারে
- সমান্তরাল রাস্তায় হাঁটতে হবে। হাঁটার যন্ত্রের সাহায্যেও হাঁটা যেতে পারে।
- এ সময় সাইড লেক রেস, মাংসপেশির কিছু ব্যায়াম, স্ট্রেংথ স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। অল্প ওজন নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কোনো ওজন উঠানো যাবে না।
- এ সময় সাঁতার কেটে ব্যায়াম করা যাবে।
- ব্যায়ামের মধ্যে সিলি স্কট, বারবার উঠবস করা যেতে পারে।
গর্ভধারণ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। ১৫ দিন পরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে আবারও বলছি, চিকিৎসক যদি ব্যায়াম করতে নিষেধ করেন তবে করবেন না। কেননা একজন চিকিৎসকই আপনার এবং আপনার অভ্যন্তরীণ শিশুটির সম্বন্ধে ভালো জানেন। নিজে নিজে ব্যায়াম করলে ভুল হতে পারে। তাই প্রশিক্ষকের কাছে ব্যায়াম করা ভালো। প্রতিটি ব্যায়ামের পর একটু বিশ্রাম নিতে হবে। তাড়াহুড়া করে ব্যায়াম করবেন না।
কাজী হাসিবুর রহমান বাদশাহ : ফিটনেস নির্দেশক, এডোনাইজ ফিটনেস সেন্টার লিমিটেড, বসুন্ধরা সিটি