কৈশোরে মাদক সেবন, স্মৃতিশক্তি হ্রাস
বয়ঃসন্ধিকালে যেসব ছেলেমেয়ে নিয়মিত মাদক সেবন করে, তারা দীর্ঘস্থায়ী মস্তিষ্কের সমস্যা পড়তে পারে। এর ফলে মস্তিষ্কের গঠনে অস্বাভাবিকতাও দেখা দেয়। এমনকি এর প্রভাব থাকে মাদক সেবন ছেড়ে দেওয়ার পরও। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েব এমডির এক প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে এমন তথ্য।
গবেষকরা বলছেন, যারা অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি অধিক গাঁজা সেবন করে, তাদের বেলায় এই সমস্যা বেশি হয়।
গবেষণাকাজে মাদক সেবনকারী একদল তরুণ ও একদল বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোরকে নেওয়া হয়। এবং একপর্যায়ে এদের স্মৃতিশক্তির পরীক্ষা নেওয়া হয়।
পরীক্ষায় দেখা যায়, কিশোরদের স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক খারাপ তরুণদের তুলনায়। তারা সহজে কিছু মনে রাখতে পারছে না। গবেষকদল বলছে, অল্প বয়সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
এ ছাড়া গাঁজা সেবন আইকিউ হ্রাস করে। যারা গাঁজা সেবন করে না, তাদের মস্তিষ্কের গঠন গাঁজা সেবনকারীদের তুলনায় ভালো হয়।
প্রতিদিন মাদক গ্রহণ করে এমন ১০ জন বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোরের মধ্যে একই রকম গবেষণা চালানো হয়। তাদের এক ঘণ্টা ধরে একটি গল্প শুনানো হয়। এর ৩০ মিনিট পর গল্প থেকে কিছু প্রশ্ন করা হয়। দেখা যায়, অধিকাংশ কিশোরই খুব কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে।
যারা দুই বছরের বেশি সময় ধরে গাঁজা সেবন করছে, তারা ভীষণভাবে ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব, মাদক সেবন ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে জানান গবেষণাকর্মটির প্রধান গবেষক ড. মেথিউ স্মিথ। তিনি নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটির ফাইন বার্গ স্কুল অব মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক।
এ ছাড়া মাদক সেবনের পাশাপাশি আরো অনেক উপাদান রয়েছে, যা স্মৃতিশক্তির হ্রাস ঘটায়। অতিরিক্ত অ্যালকোহলপানেও স্মৃতিশক্তি হ্রাস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, স্মৃতিশক্তি হ্রাসের জন্য গাঁজা সরাসরি দায়ী কি না এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে গবেষকরা এও জানান, যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক গ্রহণ করে, তাদের মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে।
ড. স্মিথ বলেন, ‘মাদক সেবন কখনোই শরীরের জন্য ভালো হতে পারে না। আর এ ধরনের অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আরো বেশি করে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়াতে হবে। সমস্যার ভয়াবহতা সম্বন্ধে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’