গরুর মাংস খাওয়া ছাড়লে কী হয়?
গরুর মাংস খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। অনেকের ক্ষেত্রে এই পছন্দের ব্যাপারটি এমন, একবেলাও গরুর মাংস ছাড়া তারা খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না। তবে এত বেশি গরুর মাংস খাওয়া শরীরের জন্য নিরাপদ নয় মোটেও, স্বাস্থ্যসচেতন যে কেউই এ কথা জানেন।
বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, গরুর মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংসে ক্যানসার তৈরিকারী উপাদান কারসিনোজেন রয়েছে। প্রক্রিয়াজাত মাংস হলো—সসেজ, হট ডগ, হ্যাম বার্গার ইত্যাদি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন ৫০ গ্রামের বেশি প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণে ক্যানসারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বেড়ে যায়।
গরুর মাংস খাওয়া কমিয়ে দিলে শরীরের অনেক জটিলতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। টপ টেন হোম রেমিডি জানিয়েছে গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিলে কী হয় এর কথা।
১. হার্ট ভালো থাকে
লাল মাংসের মধ্যে এক ধরনের উপাদান থাকে। একে এল কারনিটাইন বলে। এটি হার্টের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধা তৈরি করে। সেইসাথে হার্টের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধলে হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়। খাদ্যতালিকায় সবজি থাকলে এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধ হয়।
এ ছাড়া অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। কাজেই গরুর মাংস কম খান, হার্টের ওপর চাপ কমান।
২. ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি খেলে ক্যানসার হতে পারে। এটি কোলোরেক্টার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
৩. আয়ু বাড়ে
মাংস খাওয়া, বিশেষ করে লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস আয়ু কমিয়ে দেয়। ২০০৩ সালে আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, যারা কম পরিমাণ মাংস খায় তারা দীর্ঘায়ু হয়ে থাকেন।
২০১২ সালের আর্কাইভ অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিনের প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, যারা গরুর মাংস বেশি খায় তারা দ্রুত মারা যায়। কেননা এদের হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যারা নিয়মিত গরুর মাংস খান তাদের ১৮ শতাংশ বেশি ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। আর যারা লাল প্রক্রিয়াজাত মাংস খান তাদের ঝুঁকি ২০ ভাগ বেড়ে যায়।
৪. ওজন কমে
গরুর মাংসের মধ্যে চর্বি থাকার কারণে ওজন বেড়ে যায়। আর খাওয়া কমিয়ে দিলে ওজন কমে।
৫. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
গরুর মাংস বেশি খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। ওজন বাড়া, বিশেষ করে পেটের মেদ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। লো ক্যালোরির সবজির ডায়েট পেটের মেদ কমায় এবং ইনসুলিনের স্পর্শকাতরতা কমায়।
৬. উচ্চ রক্তচাপ কমে
গরুর মাংসের অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
৭. রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস প্রতিরোধ হয়
যাদের রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস রয়েছে তাদের কিছু কিছু খাবার খেলে সমস্যা কমে। গরুর মাংস রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিসের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এটি খাওয়া কমিয়ে দিলে এই সমস্যা অনেকটা কমে।
৮. ইউরিক এসিড কমে
অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। বেশি গরুর মাংস খাওয়া ত্বকের ব্রণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এই খাবার কমিয়ে সবজি খেলে ত্বক ভালো থাকে।
৯. কিডনি রোগের ঝুঁকি
গরুর মাংস প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের ভালো উৎস। অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে এর মধ্যে থাকা বেশি প্রোটিন কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।