হাম হলে কী করবেন
হাম হচ্ছে ভাইরাসজনিত অতি সংক্রামক ব্যাধি। এই রোগ সাধারণত শিশুদের বেশি হয়। তবে বড়দেরও এ রোগ হতে পারে। মূলত স্পর্শ, হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়।
উপসর্গ
• এ রোগে উচ্চ মাত্রার জ্বর হয়।
• নাক দিয়ে পানি ঝরে।
• চোখে জ্বালা-পোড়া করে।
• কাশি হয়, হাত-পা ব্যথা করে।
• দেহে অবসন্নতা আসে।
• খাবারে অরুচি হয়।
• এর দু-এক দিনের মধ্যে মুখের অভ্যন্তরে, গালের ভেতরের দিকে একটি নীলচে সাদা দাগ দেখা যেতে পারে।
• একপর্যায়ে গায়ে ও চামড়ায় ছোপ ছোপ র্যাশ দেখা যায়।
রোগনির্ণয়
হামের রোগনির্ণয়ের জন্য উপসর্গই যথেষ্ট। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে রক্ত ও লালার পরীক্ষা করা হয়।
ঝুঁকি
এ রোগের মাত্রা বেশি হলে রোগীর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ রোগের জটিলতায় মস্তিষ্কে প্রদাহ, খিঁচুনি এবং শরীরে অতিরিক্ত পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যায়। তবে যদি কোনো কারণে অতিরিক্ত মাথাব্যথা করে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হয়, অতিরিক্ত বমি হয় এবং ডায়রিয়া শুরু হয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
এ রোগে চিকিৎসকরা মূলত উপসর্গের বিপরীতে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। যেমন—অতিরিক্ত জ্বরে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা এ রোগের জটিলতা কমিয়ে রাখার জন্য ভিটামিন-এ সাপ্লিমেন্ট সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ সময় শিশু যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খাবার খায় এবং কোনোভাবেই যেন শরীরে পানিশূন্যতা না দেখা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রতিরোধ
এই রোগের একটি ভালো বিষয় হলো, সাধারণত একবার হলে আর হতে দেখা যায় না। যেহেতু হাঁচি, কাশি এবং স্পর্শের মাধ্যমে রোগ ছড়ায়, তাই যেসব শিশু স্কুলে যায়, তাদের স্কুলে যেতে না দেওয়াই ভালো। আক্রান্ত ব্যক্তিকে সন্তানসম্ভবা মা এবং জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে রাখতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে।
লেখক : ডা. মুহাম্মদ হাসান আন্দালীব, অ্যাক্সিডেন্ট অ্যান্ড ইমার্জেন্সি বিশেষজ্ঞ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।