রসুনের দোষগুণ
সাত হাজার বছর আগে মধ্য এশিয়ায় রসুনের প্রচলন ছিল। এর পর আফ্রিকা ও ইউরোপে এর প্রচলন শুরু হয়। এলিফ্যান্ট ওয়াইল্ড, ক্রো, ফিল্ড, পার্ল—এ ধরনের বিভিন্ন রকম রসুন সারা পৃথিবীতে পাওয়া যায়।
হাজার বছর ধরে খাদ্য ও ওষুধ উভয় রূপে রসুন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কীটনাশক হিসেবেও এর ব্যবহার রয়েছে। শ্বাসযন্ত্রের রোগ, দুর্বল পরিপাক এসবের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন গ্রিক, রোমান সৈনিক ও নাবিকরা নিয়মিত রসুন গ্রহণ করতেন।
১ থেকে ৩ কোয়া (৩-৯ গ্রাম) রসুনে পাওয়া যায় কার্বোহাইড্রেট ৩৩ দশমিক শূন্য ৬ গ্রাম, শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম ফ্যাট, প্রোটিন ৬ দশমিক ৩৬ গ্রাম, ৩১ দশমিক ২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম ১৮১ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ২৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৫৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪০১ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৭ মিলিগ্রাম, লৌহ ১ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ১ দশমিক ৬৭২ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ১ দশমিক ১৬ মিলিগ্রাম।
রসুনের এলিসিন নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বৃদ্ধি করে রক্তবাহিকাগুলোর অনমনীয়তা দূর করে। ফলে রক্তবাহিকা শিথিল হয়ে মোট রক্তচাপ হ্রাস পায়।
রসুনের এলিসিনসহ অন্যান্য উদ্বায়ী উপাদানের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকবিরোধী ক্রিয়া রয়েছে। রসুনের সেলেনিয়াম নামে খনিজ উপাদানকে হৃদয় রক্ষাকারী খনিজ বলা হয়।
রসুন বেটা ক্যারোটিন, জ্যানথিন ও ভিটামিন-সি’র মতো ফ্ল্যাভোনয়েড ধারণ করে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন-সি সংক্রমণের (ইনফেকশন) বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
রসুনের অ্যাজোইনের অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণ সোরিয়াসিসের চিকিৎসায় উপকারী।
তবে রসুনের কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। যেমন :
রসুন মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী এবং এর মূল কারণ হলো রসুনের উদ্বায়ী তরল অ্যালাইল মিথাইল সালফাইড।
রসুন থেকে অ্যালার্জি সৃষ্টি হতে পারে, যার লক্ষণ হলো ডায়রিয়া, মুখ ও গলার আলসার, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা ইত্যাদি। দীর্ঘদিন রসুনের সম্পূরণের ফলে অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ, তন্দ্রা ভাব, রক্তক্ষরণ, চুলকানি, অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে।
সৈয়দা তাবাসসুম আজিজ : সহকারী অধ্যাপক, খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ।