রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়লে কী খাবেন
অনেকেই বর্তমানে বলে আমরা ইউরিক এসিডের সমস্যায় ভুগছি। রক্তে যখন ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। তাকে আমরা হাইপার ইউরেসিমিয়া বা ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া বলি।
রক্তে যে মাত্রায় ইউরিক এসিড থাকতে হয়, সেটি স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেড়ে গেলে অনেকেই অভিযোগ করেন পায়ে ব্যথা বা অনেক সময় জ্বালাপোড়া করে, ক্র্যাম করে। এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে হয়। তবে এটিও ঠিক যে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে ওষুধের চেয়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হলো, সঠিক খাদ্যাভ্যাস। কারণ, ডায়েটের মাধ্যমে রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে পারেন। কেননা পিউরিন-সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে ইউরিক এসিড বেড়ে যায়। ইউরিক এসিডের মাত্রা স্বাভাবিক করতে পিউরিন-সমৃদ্ধ খাবার যেমন টমেটো, শসা, গাজর এবং যেকোনো লাল রঙের সবজিকে এড়িয়ে যেতে বলা হয়।
পাশাপাশি এই সময় ডাল বা ডালজাতীয় খাবার এড়িয়ে গেলে আপনি সহজেই রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে পারবেন। মাংসের ক্ষেত্রে বলা যায় যে পাখির মাংস যেমন কবুতর বা হাঁস ও গরু- খাসির মাংসকে এড়িয়ে চলা অবশ্যই উচিত। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অরগান মিট যেমন কলিজা, গিলা, মগজ এগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে প্রোটিনের জন্য আপনি ডিমের সাদা অংশ, দুধ, টকদই অথবা মাছ থেকে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারেন। যেহেতু আমরা অনেক বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো এই সময়ে এড়িয়ে যেতে বলি, তাই সারা দিনে প্রোটিনের চাহিদা মেনে চলার জন্য এই খাবারগুলো আপনাকে সাহায্য করবে। ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে পিচ্ছিল জাতীয় সবজি যেগুলো আছে, যেমন ঢেঁড়স, ফুলকপি, কচুর লতি, কচুর মুখি এগুলোও এড়িয়ে যেতে হবে।
সাধারণত সবুজ পানীয় সবজি যেমন লাউ, চালকুমড়া,পটোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা এগুলো খাবারের তালিকায় বেশি করে রাখবেন। অবশ্যই পানি খেতে ভুলবেন না। কারণ, পানি ইউরিক এসিডকে ইউরিনের মাধ্যমে বের করে রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। তবে আপনি খাবার নিয়ন্ত্রণ করে দুই মাস পর অবশ্যই ইউরিক এসিড পরীক্ষা করে দেখুন। সেই ক্ষেত্রে এটির মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে গেলেও ঝট করেই বাদ দেওয়া খাবারগুলো শুরু করবেন না। আস্তে আস্তে ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ মতে অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে খাবারগুলো ধীরে ধীরে গ্রহণ করুন। তাই ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে অবশ্যই ডায়েট ঠিক করে ফেলুন। এটি আপনাকে অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তুলতে পারবে।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল