ডায়াবেটিস রোগীরা কোন ধরনের কলা খেতে পারবেন?
স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে আসলে কলার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। কলা খেতে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য তো কোনো কথাই নেই। এই ফলটি পটাশিয়ামের উৎস তাই রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। হার্ট ভাল রাখতে এবং পেশি মজবুত রাখতেও পটাশিয়াম খুব গুরুত্বপূর্ণ। কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কলায় রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা সঙ্গে সঙ্গে শক্তি যোগায়। কলা পেশি মজবুত করে। কলা হাড়ের জন্য ভাল। ক্যালশিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে, ফলে অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। কিন্তু প্রশ্ন হল, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে কোন ধরনের কলা খাওয়া যায়?
যখন রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যায়, তখনই ডায়াবেটিস হয়। এজন্য প্রথম থেকে সতর্ক না হলে, ডায়াবেটিস হার্ট, কিডনি ও চোখের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ব্লাড-সুগার রোগীদের খাবার বিষয়ে খুব সচেতন থাকতে হয়। ডায়াবিটিস রোগীরা কী খেতে পারেন আর কী খেতে পারেন না, তার অনেকটাই নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট খাবারটি রক্তে শর্করার মাত্রার উপর কতটা প্রভাব ফেলে, তার উপর। এই বিষয়টি সাধারণত ‘গ্লাইসেমিক লোড’ ও ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ -এর উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় বলে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮।
টাইপ টু ডায়াবেটিসের রোগীদের এমন খাবার খেতে হয়, যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। যে সব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, সেসব খাবার ধীরে ধীরে শরীরে শোষিত হয় এবং দ্রুত ব্লাডসুগার না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে। এইদিক থেকে দেখতে গেলে কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থেকে মাঝারি, ৪২-৬২-র মধ্যে।
কাঁচা কলা খাওয়া যেতেই পারে, কারণ এটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। কাঁচা কলায় থাকে ‘রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ যা ক্ষুদ্রান্ত্রে দ্রুত পাচিত হয় না। উলটে নিয়ন্ত্রণে থাকে শর্করার বিপাক। পাশাপাশি পেটের সমস্যায় উপকারী কাঁচা কলা।
পাকা কলাতে থাকে পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬। কিন্তু পাকা কলাতে কিছু প্রাকৃতিক ‘সুইটনার’ থাকে। এই কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স-ও কাঁচা কলার থেকে বেশি। তাই এই ধরনের কলা খাওয়ার আগে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
কলা যখন বেশি পেকে যায় ও কিছুটা খয়েরি রঙের হয়ে যায়, তখন তা ডায়াবিটিস রোগীদের খাওয়া উচিত নয়। এর ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ অনেক বেশি। এই ধরনের কলায় স্টার্চ ভেঙে সরল শর্করাতে রূপান্তরিত হয়, যা খুব সহজেই বিপাক হয়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক।