রোজায় সুস্থ থাকতে কী খাবেন?
রোজায় ইফতার, রাতের খাবার ও সাহ্রীতে অনেকেই অনেক রকম খাবার খেয়ে থাকেন। প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করতে হয়। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে কিডনি ভালো থাকবে। পাশাপাশি রোজায় সুস্থ থাকতে পরিমিত পরিমাণে সঠিক প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
তবে আমাদের দেশে ইফতারে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করার চল রয়েছে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন রক্তের ইউরিক এসিড বাড়িয়ে ফেলতে পারে। অথবা যাদের ডায়বেটিস রয়েছে, তাদের ইউরিনে পরিমাণের চেয়ে বেশি প্রোটিন বের হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে, সঠিক প্রোটিন খেতে হবে।
ছোলা
রোজায় অনেকের ঘরেই ছোলা তৈরি করা হয়। অতিরিক্ত তেল আর মসলা দিয়ে তৈরি এই ছোলা প্রতিদিন খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তেল রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে পারে, আবার মসলা গ্যাস বা এসিডিটির কারণ। প্রতিদিন ছোলা ইফতারে না খাওয়াই ভালো। একজনের জন্য ক্যালরিভেদে দুই থেকে তিন টেবিল চামচ ছোলার বেশি না খাওয়াই ভালো।
তবে সিদ্ধ ছোলা, শসা, টমেটো, লেবুর রস দিয়ে খেলে ভালো। এ ছাড়া টক দই দিয়ে ছোলার সালাদ করেও খাওয়া যেতে পারে। তবে ছোলা প্রতিদিন ইফতারে না খাওয়াই ভালো। একজনের জন্য ক্যালরিভেদে দুই থেকে তিন টেবিল চামচ ছোলার বেশি না খাওয়াই ভালো।
পেঁয়াজু
ডালের তৈরি পেঁয়াজু দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন। ডুবু তেলে ভাজা পেঁয়াজু থেকে অনেক ক্যালরি পাওয়া যায়। এটি থেকে ওজন বেড়ে যেতে পারে। এমনকি টানা এক মাস খেলে রক্তের কোলেস্টেরল ও প্রেশার বাড়ার ঝুঁকি থাকে। তাই রোজ পেঁয়াজু না খেয়ে অল্প তেলে ভাজা সবজি আর চালের গুঁড়ার কাটলেট বা চপ খাওয়া যেতে পারে।
বেগুনি
সবজি হলেও বেসন দিয়ে ভাজার কারণে এ থেকে প্রোটিন চলে আসে। তাই রোজ ডুবু তেলে ভাজা বেগুনি না খাওয়াই ভালো। এ ছাড়া বেসন রোজ খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
ডিম
রোজায় ভাজাপোড়া খাওয়ার থেকে ইফতারে একটি সিদ্ধ ডিম বা ডিম পোচ খেলে শরীরের জন্য ভালো।
মাছ
এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রোটিন। রোজায় ছোলা, পেঁয়াজু আর মাংসের ভিড়ে অনেকটাই হারিয়ে যায় মাছের মতো একটি ভালো প্রোটিন। হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মাছের জুড়ি নেই। ইফতারে মাছের চপ, স্যান্ডউইচ, কাটলেট ছাড়াও মাছের নানা রেসিপি করা যায়। সেহরিতে ভাতের সঙ্গে মাছ আর সবজি খুবই উপকারী মেন্যু।
মাংস
রোজায় কমবেশি হলেও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া হয়। এতে তেলের কারণে হলেও কিছু ফ্যাট খাওয়া পরে। তাই রোজায় গরু-খাসির মাংস কম খাওয়াই ভালো। তবে মুরগির মাংস দিয়ে ঘরে তৈরি হালিম, খিচুড়ি, স্যান্ডউইচ, স্যুপ ও কারি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
দুধ
দুধ প্রোটিনের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের খুব ভালো উৎস। রোজায় হাড়ের ব্যথা, মাংসপেশির সুরক্ষার জন্য রোজ দুধ বা দুধের খাবার খেতে হয়। ইফতারে দুধের বানানো মিষ্টান্ন, দই, ছানা এবং সাহ্রী বা রাতের খাবারে দুধ, ভাত, ফল বা দুধ-মুড়ি-ফল বা সিরিয়াল দুধ খুবই উপকারী একটি খাবার।