ডোনাটে ছিদ্র কেন? খাতায় মার্জিন কোত্থেকে এলো?
জিনিসগুলো সাধারণ। তোমার চোখের সামনেই একে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ তুমি ধারণাও করতে পারবে, এসব সাধারণ জিনিস নির্মাণের পেছনের ইতিহাস অসাধারণ, যা তোমাকে অবাক করে দেবে। চলো, ব্রাইটসাইটের সৌজন্যে জেনে আসি এমন পাঁচটি জিনিসের কথা, যা খুবই সাধারণ, কিন্তু তাদের তৈরির ইতিহাস অসাধারণ।
ডোনাটের ছিদ্র
বর্তমানে ডোনাট একটি প্রচলিত খাবারের নাম। তোমাদের পছন্দের তালিকায় নিশ্চয়ই বেশ ওপরের দিকে রয়েছে এটি। কিন্তু কখনো কি মনে হয়েছে, প্রায় ১০০ বছর পুরোনো এই খাবারটার আকৃতি এমন কেন হলো? কেনই বা ডোনাটের মাঝখানে ছিদ্র রয়েছে? বর্তমান সময়ে বেকারির লোকেরা বিভিন্ন আকৃতির এবং গড়নের পেস্ট্রি তৈরি করতে পারেন। কিন্তু অতীতে বিষয়টা এত সোজা ছিল না। একটি ডোনাটের চারদিক সেদ্ধ হলেও মাঝখানের অংশটুকু কাঁচা রয়ে যেত। আবার মাঝখানের অংশটুকু সেদ্ধ করতে গেল চারদিকটা পুড়ে যেত। তাই এ বিড়ম্বনা এড়াতে মাঝখানে ছিদ্র করে ডোনাট তৈরি করতে শুরু করে বেকারিগুলো। আর ডোনাট পায় বর্তমান আকৃতি।
রোদচশমা
নাম শুনেই বুঝতে পারছ, রোদের হাত থেকে বাঁচতেই রোদচশমা বা সানগ্লাসের আবিষ্কার। কিন্তু বিষয়টা যতটা সোজা ভাবছ, আসলে ততটা সোজা নয়। কালো রোদচশমা তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল উত্তরমেরুবাসীর চোখকে তুষারপাতের হাত থেকে বাঁচানো। তবে ১২ শতাব্দীতে এসে রোদচশমা বিস্তার লাভ করে। তখনকার সময়ে চীন দেশের বিচারকরা সাক্ষী বা অভিযুক্তদের থেকে নিজেদের আসল আবেগ লুকানোর জন্য রোদচশমার আশ্রয় নিতেন।
খাতার মার্জিন
না, তোমাদের স্কুলের ম্যাডাম বা স্যারদের নম্বর দেওয়ার জন্য খাতায় মার্জিন দেওয়া শুরু হয়নি। আসল ঘটনা হচ্ছে অতীতে ইঁদুরের উৎপাত খুব বেশি ছিল। আর তাদের প্রিয় কাজের একটি ছিল মানুষের জরুরি কাগজের চারদিক কুচি কুচি করে কাটা। ফলে কাগজের সঙ্গে জরুরি তথ্যগুলোও চলে যেত ইঁদুরের পেটে। ইঁদুরের হাত থেকে তথ্য বাঁচাতে মানুষ খাতার কিনারা বা ধার দিয়ে একটু জায়গা ছেড়ে লেখা শুরু করতেন। সেখান থেকেই খাতায় মার্জিন রাখার চল শুরু হয়।
হেডফোন বা ইয়ারফোন
তুমি হয়তো খেয়াল করেছ হেডফোনের জ্যাক দুই থেকে তিনটি সূক্ষ্ম ও সরু ফিতে দ্বারা ডোরাকাটা থাকে। না, শুধু সুন্দর দেখানোর জন্য এই তার বা ফিতে দ্বারা পেঁচানো হয় না। প্রতিটি সরু ফিতের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক তার পৌঁছে দেওয়া হয়। যদি এই ফিতের মধ্যে দিয়ে তার না থাকত, তাহলে শুধু হেডফোনের একটি স্পিকারেই গান শোনা যেত। অন্যটি পড়ে থাকত বেকার।
গলফ বল
বিশ্বের প্রথম গলফ বল কিন্তু খাঁজকাটা ছিল না; বরং তা পুরোপুরি মসৃণ ছিল। কিন্তু গলফ খেলোয়াড়রা দেখলেন, মসৃণ বলের চেয়ে পুরনো, এবড়োখেবড়ো, ফাটল ধরা বলেই খেলে মজা পাচ্ছেন। তাই কয়েক বছর ধরে পুরোনো বলেই খেলতে থাকলেন। বিষয়টা নজর এড়ায়নি গলফ বল নির্মাতাদের। তাই এর পর থেকে তাঁরা নির্মাণ শুরু করলেন গলফের খাঁজকাটা বল।