প্লেন কীভাবে আকাশে ওড়ে
আমাদের চারপাশজুড়ে আছে বায়ুমণ্ডল। একদম আমাদের ঘিরে রেখেছে। বলা যায়, আমরা ওটার ভেতরই ডুবে আছি। এই বায়ুমণ্ডল মূলত বায়ুর ভীষণ মোটা এক স্তর। মাটি থেকে যত ওপরে যাওয়া যায়, এই বায়ুমণ্ডল ততই হালকা বা পাতলা হতে থাকে। একে আবার ৫টা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই স্তরগুলোর দ্বিতীয় স্তরটির নাম ট্রটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল। এই স্তর দিয়েই উড়ে যায় প্লেন।
এখন প্রশ্ন হলো, প্লেন কীভাবে আকাশে ওড়ে। ওটা কেন নিচে পড়ে যায় না? কারণ, প্লেন বায়ুতে ভর দিয়ে ভেসে থাকতে পারে। কীভাবে। ধরা যাক, সমান আকারের দুই টুকরো কাগজ। এক টুকরো দলা করে আর আরেক টুকরো এমনি ছেড়ে দেওয়া হলো। তাহলে কোনটা আগে মাটিতে পড়বে? দলা না পাকানো কাগজের টুকরোটি। কারণ, দুটোর ওজন সমান হলেও ওটার আকার বেশি বড়। আর তাই বায়ুর চাপও ওটার ওপর বেশি কাজ করেছে। ঠিক এভাবেই প্লেন আকাশে ভেসে থাকতে পারে।
কিন্তু আকাশের কিছু কিছু জায়গায় নানা কারণে এই বায়ুর চাপ কমে যায় কিংবা বেড়ে যায়। চাপ কমে গেলে বায়ু আর প্লেনকে ভাসিয়ে রাখতে পারে না। তখন ওটা নিচের দিকে নামতে শুরু করে। আবার চাপ যদি বেড়ে যায়, তখন সেটা প্লেনকে ঠেলে আরো ওপরে নিয়ে যায়। দুটোই কিন্তু খুবই সমস্যার কথা। আর অত ওপরে প্লেনে করে ঘোরার সময় যদি প্লেন এমন আচরণ করে, তখন কী ভয়টাই না লাগে!
বায়ুমণ্ডলের যে জায়গাগুলোতে বায়ুচাপ এমনতরো কম-বেশি হয়, সেই জায়গাগুলোকেই বলা হয় এয়ার পকেট বা এয়ার হোল। এই এয়ার পকেট নানা কারণে তৈরি হতে পারে। যেমন, গাড়ি চলার সময় পেট্রল পুড়ে যেমন ধোঁয়া বের হয়, প্লেনের জ্বালানি গ্যাসোলিন পুড়েও একরকম গরম গ্যাস বের হয়। এই গ্যাস গরম হওয়ার কারণে সেখানকার বাতাস খুব হালকা হয়ে যায়। ফলে সেখানে বায়ুচাপ কমে যায়। অর্থাৎ এয়ার পকেট তৈরি হয়। তাই কখনো কয়েকটা প্লেন সামনে-পেছনে লাইন ধরে যায় না। বরং সব সময় পাশাপাশি লাইন করে যাওয়া-আসা করে। আবার বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়ের মতো নানা প্রাকৃতিক কারণেও এয়ার পকেট তৈরি হতে পারে।