আইনি জিজ্ঞাসা
তালাকের পরও কি কোনো নারী ভরণপোষণ পাবেন?
একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা (ছদ্মনাম)। দাম্পত্য কলহের জেরে তাঁর ব্যবসায়ী স্বামী তাঁকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন। আকস্মিক এই নোটিশে হতভম্ব রহিমা। কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় তিনি একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হলেন। ওই আইনজীবী তাঁকে পরবর্তী সহজ কিছু করণীয় বলে দিলেন। এই বিষয়গুলো রহিমার মতো আকস্মিক সমস্যায় পড়া অনেক মুসলিম নারীর জন্য সহায়ক হতে পারে।
ওই আইনজীবী রহিমাকে জানালেন, তিনি পারিবারিক আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে।
পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিচ্ছেদের পর সন্তানও আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারে।
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, স্ত্রী খরপোশ দাবি করে স্বামীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে আবেদন করতে পারেন।
আবেদন পাওয়ার পর চেয়ারম্যান স্ত্রী ও স্বামীর পছন্দমতো একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে সালিশ পরিষদ গঠন করবেন। সালিশ পরিষদ স্ত্রীর দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে ভরণপোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত এবং সে অনুযায়ী একটি প্রত্যয়নপত্র দেবে।
বিবাহবিচ্ছেদের পরও কিছুদিন স্ত্রী ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হন। যেদিন থেকে বিচ্ছেদ কার্যকর হয়, সেদিন থেকে ৯০ দিন (এ সময়কে ইদ্দত বলা হয়) পর্যন্ত স্ত্রী ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হন।
কোনো স্ত্রী তাঁর স্বামীর কাছ থেকে মামলার আগের সময়ের জন্য অথবা বিবাহবিচ্ছেদের আগে যে সময় স্বামী ভরণপোষণ দেয়নি, সে সময়ের জন্যও ভরণপোষণ চাইতে পারেন।
লেখক : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।