উদরপূর্তি
সয় থ্রি-তে মন ভরে খাওয়া-দাওয়া
ব্যস্ত নগরীতে একটু প্রশান্তির জায়গা খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। এমনিতে জায়গার কোনো অভাব নেই, কিন্তু শান্তিতে কিছুক্ষণ আড্ডা হবে, খাওয়া-দাওয়া হবে, বেশ খানিকটা সময় কাটানো যাবে, এমন জায়গার সন্ধানে নগরবাসীর চেষ্টার অন্ত নেই। ব্যস্ত ও ভোজনরসিক নাগরিক একটু সময় হলে ঘুরে আসতে পারেন ধানমণ্ডিতে অবস্থিত ‘সয় থ্রি’ ক্যাফে থেকে, যেখানে খুঁজে পাবেন গাছগাছালির সজীবতা, মাটির ঘ্রাণ আর জিভে জল আসা খাবারের স্বাদ।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চার বন্ধুর প্রচেষ্টায় ঢাকার মাটিতে এক টুকরো গ্রামের আবির্ভাব হয়। নাম রাখা হয় ‘সয় থ্রি ক্যাফে’। ঢাকা শহরে গ্রামীণ পরিবেশের ক্যাফে হাতেগোনা যে দু-একটা খুঁজে পাওয়া যায়, তার মধ্যে সয় থ্রি অন্যতম। মাটির দেয়াল, বাঁশের প্রাচীর, টিনের ছাউনি আর কাঠের আসবাব—সবকিছু মিলে দারুণ একটি পরিবেশ।
সয় থ্রি ক্যাফের অন্যতম কর্ণধার মুন্নী রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যে খাবারটি আমি খাই, আমার পরিবার খায়, আমাদের এই ক্যাফেতে সেই খাবারটিই সবাইকে খাওয়ানোর চেষ্টা করি।’
মুন্নী রায় আরো বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমি নিজেই খুঁজে বেড়াতাম এমন পরিবেশের একটি রেস্টুরেন্ট। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য একটু নিরিবিলি পরিবেশ চাইতাম। যেখানে খেতে পারব, আড্ডা দিতে পারব। এমন কিছু খুঁজে না পেয়ে অবশেষে নিজেরাই এই ক্যাফে খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম।’
ক্যাফেটির ডিজাইন আর ডেকোরেশনে রয়েছে ভিন্নতা এবং নতুনত্ব। রাস্তা দিয়ে ক্যাফেতে ঢুকতেই রয়েছে কাঠের চেয়ার-টেবিল, যার ওপর ছাউনি দেওয়া। চারপাশে গাছের ছড়াছড়ি। হাতের বাঁ দিকে ছোট্ট একটি রুম। কাঠের দরজা দিয়ে ঢুকতেই আলো-আঁধারের লাইটিং চোখে পড়বে। এই রুমে বসার জন্য এসির ব্যবস্থা রয়েছে। রুম থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিক থেকে দোতলায় যাওয়ার রাস্তা বানানো হয়েছে। স্টিলের সিঁড়ি দিয়ে উঠলে দেখবেন টিনের ছাউনির নিচে বেশ কয়েকজনের বসার জায়গা। যেখানে দিনের আলো আর রাতের আঁধার সবই যেন অন্য রকম সুন্দর।
একসঙ্গে ১২০ জনের বেশি মানুষ বসে খেতে পারবেন এই দ্বিতল ক্যাফেতে। জাপান থেকে ট্রেনিংপ্রাপ্ত শেফের হাতে রান্না হয় এখানে। প্রায় সব ধরনের খাবারের স্বাদ পাবেন এই ক্যাফেতে। ইতালিয়ান ওমলেট, গ্রিলড চিকেন সালাদ, মাটন রোগান জোশ, চিকেন পাস্তা উইথ হোয়াইট সস, মাশরুম স্টেকস, লেমন অ্যান্ড গার্লিক চিকেন, পনির বাটার মসলা, চিকেন হট কারি, বিফ আচারি, সয় থ্রি স্পেশাল কাবাব প্লাটার, বাটার রাইসের মতো মজাদার খাবার খেতে পারবেন সয় থ্রি ক্যাফেতে। আর দামটাও হাতের নাগালে। তাই আর দেরি না করে আজই ঢুঁ মেরে আসুন ধানমণ্ডির ৩ নম্বর রোডের ৩০ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত এই ক্যাফে থেকে। যেখানে নিরিবিলি পরিবেশের পাশাপাশি পাবেন নানা স্বাদের মুখরোচক সব খাবার।
সয় থ্রি স্পেশাল রেসিপি
রেসিপি-মাটন রোগান জোশ
উপকরণ
খাসির পেছনের পায়ের মাংস হাড়সহ ছোট টুকরা করা এক কেজি, আদা বাটা এক টেবিল চামচ, রসুন বাটা এক টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া এক টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া এক টেবিল চামচ, সয় থ্রি স্পেশাল সস দুই টেবিল চামচ, গরম মসলা আধা টেবিল চামচ, অল্প তেল এবং লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে খাসির মাংসের সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে মেরিনেটের জন্য এক ঘণ্টা রেখে দিন। এবার অল্প আঁচে মাংস সেদ্ধ হতে দিন। এক ঘণ্টা পর সেদ্ধ হওয়া মাংসের সঙ্গে সয় থ্রি স্পেশাল সস মিশিয়ে নিন। এবার চুলায় একটি প্যান দিয়ে তেল গরম করে তাতে মসলা মেশানো মাংসটি দিয়ে পাঁচ মিনিট কষিয়ে অল্প আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল দারুণ সুস্বাদু মাটন রোগান জোশ।
রেসিপি-লেমন অ্যান্ড গার্লিক চিকেন
উপকরণ
হাড়ছাড়া বড় মুরগির মাংস চার টুকরা, আদা বাটা আধা টেবিল চামচ, রসুন বাটা আধা টেবিল চামচ, সরিষা বাটা আধা চা চামচ, গার্লিক সস আধা চা চামচ, সাদা গোলমরিচের গুঁড়া সামান্য, লেবুর রস এক টেবিল চামচ, সয় থ্রি স্পেশাল সস এক টেবিল চামচ, তেল পরিমাণমতো এবং লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে মুরগির মাংসের সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে মেরিনেটের জন্য এক ঘণ্টা রেখে দিন। এবার একটি গ্রিলারে মেরিনেট করা মুরগি সেঁকে নিন, যতক্ষণ না মাংস সেদ্ধ হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর মাংসের টুকরাগুলো উল্টে নিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে গ্রিলার থেকে নামিয়ে সেদ্ধ সবজি দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মুখরোচক লেমন অ্যান্ড গার্লিক চিকেন।