উদরপূর্তি
নস্টালজিক ক্যাফেতে আড্ডা, খাওয়াদাওয়া
বটতলায় বসে খাওয়াদাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জম্পেশ আড্ডা আর প্রকৃতির নিস্তব্ধতার মাঝে খানিকটা প্রশান্তি! জীবনের একটা পর্যায়ে এসে এরকম নস্টালজিয়ায় ফিরে যেতে চান না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ দায়। যাঁরা নিজেদের ক্যাম্পাস জীবনকে আরেকবার নতুন করে ফিরে পেতে চান, তাঁরা চাইলে একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন ধানমণ্ডির সাতমজসিদ রোডে অবস্থিত নস্টালজিক ক্যাফে থেকে। যেখানে অতুলনীয় খাবারের স্বাদ আর পুরোনো স্মৃতির মেলবন্ধনে পরিচিত খানিকটা সময় আবার উপভোগ করতে পারবেন।
গত ১২ এপ্রিল থেকে যাত্রা শুরু করে নস্টালজিক ক্যাফে। আটজন বন্ধুর তত্ত্বাবধানে ব্যস্ততম নগরীর ভিড়ে গড়ে ওঠে থিমেটিক এই ক্যাফে। যেখানে কন্টিনেন্টাল, থাই, চায়নিজ আর সি ফুডের আসল স্বাদ চেখে নিতে পারবেন অনায়াসে। নস্টালজিক ক্যাফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহিউদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এককথায় বলতে গেলে, নস্টালজিয়ার ঘোরেই এই ক্যাফে তৈরি করা কথা মাথায় আসে। যেখানে বন্ধুরা মিলে জমিয়ে আড্ডা দিতে পারবেন, সবুজের মাঝে খানিকটা সময় কাটাতে পারবেন আর এরই ফাঁকে আমাদের ক্যাফের সুস্বাদু সব খাবার চেখে নিতে পারবেন।’
ক্যাফেতে ঢুকতেই দূর থেকে আপনার চোখে পড়বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা কৃত্রিম বটতলা। তবে এই বটতলার নিচে আড্ডা দেওয়া বা চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার স্বাদ কিন্তু অকৃত্রিম। প্রকৃতি, সবুজের মায়া যেন হারিয়ে না যায়, এ জন্য এই ক্যাফেতে মোট ২৫০টি গাছ রাখা হয়েছে। যেখানে প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে পারবেন অনায়াসে। কাঠ আর বেতের মিশ্রণে তৈরি আসবাবগুলো ক্যাফের প্রাণ ধরে রেখেছে। সেই সঙ্গে বাঁশ, বেতের কারুকার্য, আর দেয়ালের আলপনা অন্য এক পরিবেশ তৈরি করেছে। বেশ অনেকটা জায়গাজুড়েই ক্যাফেটি সাজানো হয়েছে। আর এর একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে একটি স্মোক জোন।
এই ক্যাফেতে একসঙ্গে মোট ১২০ জন খেতে পারবেন। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর মতো ছোট যেকোনো আয়োজন করতে পারবেন এখানে। তবে ক্যাফের পুরো জায়গা রিজার্ভ দেওয়া হয় না। যেকোনো একটা কর্নার আপনি রিজার্ভ করতে পারবেন। যাতে নিয়মিত ক্রেতারা এসে ফিরে না যান, এ জন্য কর্তৃপক্ষ শুধু একটা কর্নারই অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং দিয়ে থাকেন।
নস্টালজিক ক্যাফেতে খেতে পারবেন গ্রিলড চিকেন সালাদ, গ্রিক সালাদ, মিক্সড সি ফুড সালাদ, চিকেন চিলি, মাসালা চিকেন, পেপার চিকেন, বিফ মিট বল, বিফ সিজলিং, বিফ চিলি, রেশমি চিকেন কাবাব, হারিয়ালি চিকেন কাবাব, মাশরুম স্টেক, মেক্সিকান স্টেক, স্কুইড ফ্রাই, ফিশ অ্যান্ড চিপস, স্টাফড ক্রাব, রেড স্নাপার স্টিম, কিং প্রাউন, প্রাউন রেড কারি, চিকেন হোয়াইট সস পাস্তা, বিফ মিট সস পাস্তা, লেমন গার্লিক চিকেনসহ মুখরোচক সব খাবার। এ ছাড়া জুসবারে নানা রকমের জুস, কফি আর চায়ের আয়োজন তো থাকছেই।
প্রতি দুই মাস পর এই ক্যাফের মেন্যুতে নতুন খাবার যোগ করা হয়। এ ছাড়া বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকছে হ্যাপি আওয়ার। এ সময়ের মধ্যে খেতে আসলে সব ধরনের খাবারের ওপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাবেন। তাহলে আর দেরি না করে ভরপুর খাবার খেতে আর জম্পেশ আড্ডা দিতে আজই চলে যান নস্টালজিক ক্যাফেতে।
নস্টালজিক ক্যাফের স্পেশাল রেসিপি
লেমন গার্লিক চিকেন
উপকরণ
হাড়ছাড়া মুরগির মাংস ১৩০০ গ্রাম, মাস্টার সস দুই চা চামচ, লেবুর রস দুই চা চামচ, চিনি সামান্য, ব্রাউন ময়দা সামান্য, চিকেন স্টক দুই টেবিল চামচ, রসুন কুচি এক চা চামচ, চিলি সস দুই চা চামচ এবং লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে মুরগির মাংসের সঙ্গে সব উপকরণের অর্ধেকটা মিশিয়ে মেরিনেটের জন্য ৩০ মিনিট রেখে দিন। এবার মেরিনেট করা মুরগির মাংস ২০ থেকে ২৫ মিনিট গ্রিল করে নিন। এখন একটি প্যানে চিকেন স্টক নিয়ে তাতে বাকি উপকরণগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে গ্রেভি করে নিন। এবার প্লেটে গ্রিল করা চিকেন নিয়ে ওপরে চিকেন স্টকের গ্রেভি দিয়ে দিন। এরপর ফ্রাইড রাইসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন দারুণ সুস্বাদু লেমন গার্লিক চিকেন।
পাস্তা চিকেন হোয়াইট সস
উপকরণ
পাস্তা ২০০ গ্রাম, মুরগির মাংস ৫০ গ্রাম, লিকুইড দুধ ২৫০ গ্রাম, অলিভ অয়েল দুই চা চামচ, ক্রিম দুই চা চামচ, চিকেন স্টক দুই টেবিল চামচ, অরিগ্যানো সামান্য, রসুন কুচি সামান্য, ব্রাউন ময়দা অল্প পরিমাণে এবং লবণ ও চিনি স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে দুধ ফুটিয়ে নিয়ে ময়দা, পাস্তা এবং মুরগির মাংস বাদে সব উপকরণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবার এতে ময়দা দিন। ঘন হয়ে গেলে গ্রেভি চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। এবার মুরগির মাংস সিদ্ধ অথবা গ্রিল করে নিতে পারেন। পাস্তা লবণ ও অলিভ অয়েল মেশানো পানির মধ্যে সিদ্ধ করে নিন। এবার একটি প্যানে অলিভ অয়েল, রসুন কুচি, শুকনা মরিচের গুঁড়ো ও লবণ দিয়ে পাস্তা সতে করে নিন। এরপর একটি প্লেটে পাস্তা দিয়ে এর ওপর চিকেন স্টকের গ্রেভি দিয়ে দিন। ওপর দিয়ে সামান্য ওরিগ্যানো ছিটিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন দারুণ সুস্বাদু পাস্তা চিকেন হোয়াইট সস।