হাসপাতালের আদবকেতা
নিজের প্রয়োজনে অথবা রোগীকে দেখতে প্রায়ই আমাদের হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু আমরা কি জানি, নিজেদের অজান্তেই আমরা হাসপাতালের নিয়ম ভঙ্গ করি? অনেক সময় রোগীর আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব অন্য রোগীর বিরক্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। হাসপাতালে সবার উচিত নিয়ম মেনে চলাফেরা করা এবং আচরণে সংযত হওয়া। অনেকেই চিকিৎসক বা নার্সদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।
হাসপাতালে গেলে অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন বা আদবকেতা মেনে চলা উচিত। লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট হিচড ও অ্যাবাউটে হাসপাতালের প্রয়োজনীয় আদবকেতার কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে। জেনে নিন হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সেসব আদবকেতা সম্বন্ধে
- রোগী দেখার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করুন। অন্য সময় গিয়ে অযথা রোগীর সাথে দেখা করার জন্য ঝামেলা করবেন না।
- হাসপাতালের নিয়মগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন। এতে বুঝতে সুবিধা হবে।
- রোগী দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন কিন্তু গায়ে মাখছেন তীব্র ঝাঁজের সুগন্ধি- এটি করা ঠিক নয়।
- রোগী যদি অসস্তি বোধ করেন তাহলে সেখানে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক নয়।
- হাসপাতালে রোগীকে কোনো ভৌতিক গল্প শোনাবেন না।
- হাসপাতালে রোগীর কক্ষে ফোনকল এলে সেটা না ধরাই ভালো।
- রোগীর সামনেই আত্মীয়স্বজনকে প্রশ্ন করবেন না কী রোগ হয়েছে।
- হাসপাতালের খাবার খুবই বাজে এমন মন্তব্য করা ঠিক নয়।
- হাসপতালের বারান্দা বা করিডর দিয়ে হাঁটার সময় ফোনে জোরে কথা বলবেন না। এতে অন্য রোগীর সমস্যা হতে পারে।
- আগে থেকেই জেনে নিন রোগী কোন ফ্লোরে আছে, কত নম্বর কেবিনে আছে। ভুল করে অন্য কোনো কেবিনে ঢুকে যাবেন না।
- জরুরি বিষয় ছাড়া হাসপাতালের কর্মচারীদের বিরক্ত করবেন না।
- হাসপাতালের ভেতর নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করবেন না।
- আপনি নিজেই যদি অসুস্থ থাকেন তাহলে অন্য রোগীকে দেখতে যাবেন না। এতে জীবানু সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
- রোগীর কাছে যাওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। আবার রোগী দেখে আসার পরও বাসায় হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
- শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে না যাওয়টাই ভালো। অনেক সময় শিশু অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এক বছরের কম বয়সী শিশুকে হাসপাতালে নেওয়া একদমই ঠিক নয় কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। আর হাসপাতালে নানা ধরনের রোগজীবাণু ঘুরে বেড়ায়।
- হাসপাতালের কোনো সরঞ্জাম ধরবেন না। এতে জীবানু ছড়াতে পারে।
- হাসপাতালে কোনো সমস্যা না হলে অযথা চেচামেচি করবেন না। ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন কী ঘটেছে।
- রোগীর বিছানায় বসবেন না। এতে আপনার শরীরের জীবানু তার শরীরে যেতে পারে। দূরে থেকে কথা বলবেন।
- ডাক্তারদের কক্ষে গিয়ে বারবার ঝামেলা করবেন না। এতে তিনি বিরক্ত হতে পারেন।
- রোগীর খাবার নিয়ে সমস্যা করবেন না। হাসপাতাল থেকে রোগীকে যা খেতে দেওয়া হয় তা তার শরীরের কথা চিন্তা করেই দেওয়া হয়। রোগীকে অন্য খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।
- ডাস্টবিন ছাড়া কোনো কিছু বাইরে ফেলবেন না। এতে হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে।
- রোগীর কেবিনে অনেকজন এসে থাকার চেষ্টা করবেন না। রোগীর কাছে যত কম মানুষ থাকবে ততই ভালো।
- রোগীর কোনো সমস্যা হলে অযথা ঝামেলা না করে ডাক্তার বা নার্স ডাকুন।
- রোগী কোনো ইনজেকশন বা সুইয়ের কারণে ব্যথা পেলে আবেগের বশবর্তী হয়ে নার্সের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না।
- অনেক সময় রোগী মারা গেলে রোগীর আত্মীয়স্বজনরা ঝামেলা করে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করে। যা একেবারেই উচিত নয়। ঠাণ্ডা মাথায় এ সময় চিন্তা করুন।
- হাসপাতালের কাগজপত্র সঠিকভাবে পূরণ করুন। এ সময় অকারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ঝামেলায় জড়াবেন না।
- হাসপতালে কাশি বা থুতু এদিক সেদিক ফেলবেন না। মনে রাখবেন এতে শুধু হাসপাতাল নোংরা হচ্ছে না, বিভিন্ন জীবানুও ছড়াচ্ছে।