যশোরে প্রচারের সময় হামলার শিকার বিএনপির প্রার্থী
যশোর পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মারুফুল ইসলাম প্রচার চালানোর সময় দুষ্কৃতকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন। এ সময় তাঁর চার-পাঁচ সমর্থকও আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
পরে মারুফুল ইসলাম যশোর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালানোর সময় ১৫ থেকে ২০ সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জেলা বিএনপির নেতা রুহুল আমিন, যুবদল নেতা উজ্জ্বল, মনি ও বিটুল আহত হয়।’
আহতদের শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিক ও আড়াইশ বেডের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান মারুফ। তিনি বলেন, ‘আমাকে হত্যার জন্যই হামলা চালানো হয়েছে। হামলার সময় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেও আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর চালায়।’
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা উদ্ধার হন বলে জানান মারুফ।
খবর পেয়ে প্রেসক্লাবে উপস্থিত হন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী। নির্বাচনের প্রচারকাজের জন্য গতকাল বুধবার থেকেই নিতাই রায় যশোরে রয়েছেন।
নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া সব জায়গায় একই অবস্থা। আমাদের প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারছেন না। প্রহসনের নির্বাচন করার সব চেষ্টা চলছে।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আক্কাস আলী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারের সময় বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মারুফ ও তাঁর সমর্থকদের দুষ্কৃতকারীরা ধাওয়া দেয়। এ সময় তাঁরা পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে গেলে মারুফ ও তাঁর সমর্থকরা নিরাপদে সেখান থেকে বের হন।’
তবে এ সময় কেউ আহত হয়েছে কি না, তা জানেন না ওসি।
এদিকে হামলার ঘটনায় দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে যশোর পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মারুফুল ইসলামসহ সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘নমরুদ-ফেরাউনের মতো ফ্যাসিস্ট আচরণ করছে সরকার। পৌরসভা নির্বাচনে বেছে বেছে সন্ত্রাসীদের মনোনয়ন দিয়েছে তারা। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। প্রশাসন নীরব। নির্বাচন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে আছে।’
নিতাই রায় চৌধুরী সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভোটের দিনসহ তিনদিন সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, যশোরের মতো খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরার সবস্থানেই একই অবস্থা। এটা কোনো সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ নয়। তিনি আরো বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনা মোতায়েন করতে হবে, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। না হলে উপজেলা নির্বাচনের মতো পৌরসভা নির্বাচনও হাস্যকর হয়ে যাবে।
এর পর বেলা ২টায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় বুঝতে পেরেই বিএনপির নেতারা ও প্রার্থীরা মিথ্যাচার করে চলেছেন। একইভাবে তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেও একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে চলেছেন।’
শহিদুল ইসলাম মিলন আরো বলেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে কি না, তা আমরা জানি না। আর ঘটলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।