অস্ত্রবিরতিতে রাজি রাশিয়া ও ইউক্রেন, আগামী মাসে আবার বৈঠক
আট ঘণ্টার বেশি আলোচনার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার আলোচনায় বসেছিল বিবদমান দেশ দুটি। এ আলোচনায় ফ্রান্স ও জার্মানি মধ্যস্থতা করেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে দ্য মস্কো টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে—প্যারিসে আলোচনায় রাশিয়া ও ইউক্রেন একমত হয়েছে যে, সব পক্ষের একটি অস্ত্রবিরতি পালন করা উচিত। মস্কো ও কিয়েভের অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘ভালো সংকেত’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন ফ্রান্সের এক কূটনীতিক।
এ ছাড়া জার্মান সরকারের একটি সূত্র পরে জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে বার্লিনে আবারও আলোচনায় বসবে চার দেশ।
ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে বিপুল সৈন্য-সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা—ইউক্রেনে সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। কিন্তু, রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রাশিয়ার দাবি—ইউক্রেনকে যেন ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্ত করা না হয়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর এক সহযোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্যারিসের বৈঠকে ইউক্রেনে রুশ সামরিক আগ্রাসনের হুমকি নিয়ে নয়, ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে চলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই সমস্যার সমাধান নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
ম্যাক্রোঁর ওই সহযোগী আরও বলেন, ‘কঠিন’ আলোচনা থেকে ইতিবাচক কিছু ফলাফল মিলেছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা ভালো একটি সংকেত পেয়েছি।’
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর চলমান সংঘাত ইস্যুতে ২০১৯ সালের পর এই প্রথম কোনো যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরে রাজি হলো রাশিয়া ও ইউক্রেন। দেশ দুটি ছাড়াও ফ্রান্স ও জার্মানি এ যৌথ বিবৃতিতে সই করবে।
রাশিয়া, ইউক্রেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ‘নরম্যান্ডি গ্রুপ’ নামে পরিচিত। এ চারটি দেশ ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছে।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। এরপর থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া এক লাখ সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নবাদী ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই উসকে দিয়ে সে পরিস্থিতি ব্যবহার করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পাঁয়তারা কষছে রাশিয়া। যদিও রাশিয়া বরাবরের মতোই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।