খুলনায় মাহেন্দ্রচালক হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
শেখ ওহিদুর রহমান ওরফে রিপন নামের এক মাহেন্দ্রচালককে হত্যা করে মাহেন্দ্র ছিনতাই করার অপরাধে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও ছিনতাই করার অপরাধে প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান ওই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ইলচ্চা বাজার এলাকার মোহাম্মদ নুর ইসলাম, একই এলাকার জনি দাস, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মো. রনি শিকদার ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা। হত্যা ও মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের কথা তাঁরা আদালতের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ বলেন, ওহিদুর রহমান একজন মাহেন্দ্রচালক। তিনি সাতক্ষীরার লাবশা এলাকার শেখ তৌহিদুর রহমানের ছেলে। ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে মাহেন্দ্র চালানোর উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফিরে না এলে পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরেরদিন নিহতের ছোট ভাই জানতে পারেন খুলনা নগরের লবণচরা থানা এলাকায় এক অজ্ঞাতব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে নিহতের ভাই শেখ শহিদুল ইসলাম খুলনায় এসে ওহিদুর রহমানের লাশ শনাক্ত করেন। লাশ দাফন শেষে তিনি জানতে পারেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে মাহেন্দ্রসহ চারজন আটক হয়েছেন। পরেরদিন তিনি নিজে বাদী হয়ে লবণচরা থানায় ওই চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
আইনজীবী আরও বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে খুলনায় আসার জন্য ৭০০ টাকায় ওহিদুর রহমানের মাহেন্দ্রটি ভাড়া করেন। রাত নয়টার দিকে খুলনার লবণচরা থানা এলাকায় পৌঁছালে আসামিরা ওহিদুর রহমানকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে সড়কের ধারে ফেলে দিয়ে মাহেন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানা পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে তাঁরা সন্দেহজনকভাবে আটক হন। এসময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁরা আদালতের কাছেও জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষী ছিলেন, এর মধ্যে আদালত ১৫ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন।