সপ্তম থেকে তদূর্ধ্ব শ্রেণির মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ, তালেবানের প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তীব্র নিন্দা
সাম্প্রতিক সময়ে আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য সপ্তম শ্রেণি থেকে তদূর্ধ্ব শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান শাসকগোষ্ঠী। তালেবানের এমন পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যেরা (এমইপি)। খবর এএনআই’র।
কয়েক মাস বন্ধ থাকার পরে আফগানিস্তানজুড়ে মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তালেবান জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মেয়েদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ থাকবে। এ ঘোষণার পর আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বেশ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
গত ৭ এপ্রিল তালেবানের তাদের আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করা উচিত উল্লেখ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নারী শিক্ষায় চলমান বিধিনিষেধগুলো প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে আফগানিস্তানে নারী ও কন্যাশিশুদের অবস্থার ক্রমাগত অবনতির বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। সেইসঙ্গে শিক্ষা, কর্মজীবন, আন্দোলন, স্বাস্থ্যসেবাসহ নারীদের মৌলিক অধিকারগুলো অস্বীকার করে জনজীবন থেকে নারী ও মেয়েশিশুদের মুছে ফেলার তালেবানের যে অবিরাম চেষ্টা, তার নিন্দাও জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে উল্লেখ করে পার্লামেন্টের সদস্যেরা আরও বলেছেন, আফগান নারীরা এমন একটি অবস্থায় আছেন, যেখানে তাঁদের বাড়ি থেকে ৭২ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে কোনো ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গ ছাড়া ভ্রমণ করার অনুমতি নেই।
তবে, যেসব আফগান নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তালেবানের শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন এবং ইইউ এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে দেশে নারী অধিকারকর্মীদের প্রতি তাদের সমর্থন বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন, তাঁদের সাহসিকতার প্রশংসাও করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
সেইসঙ্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এটাও জানিয়েছে যে, কাবুলে ইইউ’র যে প্রতিনিধিদল রয়েছে, তারা মানবিক সহায়তার সমন্বয় এবং মানবিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যেই সেখানে কাজ করছে। এর অর্থ এই নয় যে, তারা আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
গত বছরের আগস্টে তালেবান কাবুল দখল করার পর সেখানে ক্রমাগত নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশটির অর্থনৈতিক সংকট ও বিধিনিষেধের কারণে নারীদের কর্মস্থল থেকে অনেকাংশেই বাদ দেওয়া হয়েছে।