বরগুনায় শিশু রবিউল হত্যার বিচার শুরু
বরগুনায় শিশু রবিউল (১০) হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু তাহের অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৪ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
আজ মামলার একমাত্র আসামি মিরাজের (২৮) বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। আগামী ১৪ জানুয়ারি প্রথমে মামলার বাদী ও শিশু রবিউলের বাবা দুলাল মৃধার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন দুজন করে সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান বাহাদুর জানান, আজ অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি মিরাজকে আদালতে হাজির করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। শুনানি শেষে মিরাজের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
আক্তারুজ্জামান বাহাদুর জানান, অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে রবিউল হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হলো। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ মামলার বিচারকাজ শেষ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত বছরের ৩ আগস্ট রাতে পেতে রাখা জালের মাছ চুরির অভিযোগে বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ছোট আমখোলা গ্রামের ১০ বছরের শিশু রবিউলকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে তার লাশ পাশের খালে ফেলে রাখে মিরাজ। পরের দিন ৪ আগস্ট বিকেলে স্থানীয় লকরার খালে রবিউলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।
ওই দিনই রবিউলের লাশ উদ্ধার করে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট শিশু রবিউলের বাবা দুলাল মৃধা বাদী হয়ে তালতলী থানায় মিরাজকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
ওই দিনই মিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বরগুনার আমতলী উপজেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের আদালতে হাজির করা হলে মিরাজ ১৬৪ ধারায় রবিউলকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২৩ আগস্ট মিরাজকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
তালতলীর ছোট আমখোলা গ্রামের ১০ বছরের শিশু রবিউল আউয়াল স্থানীয় ফরাজিবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। রবিউলের বড় বোন খাদিজা দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট বোন জান্নাতি সবে হাঁটতে শিখেছে। তালতলীর ফকিরহাট বাজারে রবিউলের বাবা দুলাল মৃধার খুচরা যন্ত্রাংশের একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে। ওই দোকানের আয় দিয়েই চলে রবিউলদের সংসার।