২০ বছর পর মাটি খুঁড়ে বের করা হলো মোল্লা ওমরের গাড়ি
নিজেদের সাবেক আমির মোল্লা ওমরের ব্যক্তিগত গাড়িটি ২০ পর মাটি খুঁড়ে বের করেছে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। দেশটির দক্ষিণে জাবুল প্রদেশের একটি গ্রাম্য এলাকা থেকে গাড়িটি বের করা হয়।
২০০১ সালের শেষ দিকে যখন মার্কিন-সমর্থিত সৈন্যরা কাবুলে সরকার পতন ঘটায়, তখন এ সাদা টয়োটা গাড়িতে করেই মোল্লা ওমর তাঁর কান্দাহার ঘাঁটি ত্যাগ করেন এবং পরে গাড়িটি লুকিয়ে ফেলা হয়। খবর জিও নিউজ ও দ্য গার্ডিয়ানের।
সে সময় অনেকে দাবি করেছিল—যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে হামলার পর মোল্লা ওমর পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছিল, তিনি জাবুলে আছেন। ২০ বছর পর গাড়ি উদ্ধারের পর বিষয়টি স্পষ্ট হলো যে, আসলে তিনি জাবুলেই ছিলেন।
মোল্লা ওমরের জাবুলে থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন তালেবানের এক নেতাও। কারী আহমাদ নামের ওই মুখপাত্র বলেন, মোল্লা ওমর এ গাড়িতে করেই কান্দাহার থেকে জাবুলে এসেছিলেন। এরপরই গাড়িটি মাটির নিচে লুকিয়ে ফেলা হয়।
গাড়িটি জাদুঘরে রাখা হবে কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারি আহমাদ জানান, তাঁরা এ বিষয়ে এখনও চিন্তা করেননি। তবে, তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতারা গাড়িটিকে কাবুলে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
আফগানিস্তানের জাতীয় জাদুঘরে সাবেক রাজা ও প্রধানমন্ত্রীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন গাড়ি ও কোচ সংরক্ষিত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে হত্যাচেষ্টার সময় ঘাতকের গুলিতে জানালার কাচ চুরমার হয়ে যাওয়া গাড়িও রয়েছে।
তালেবান সরকারের প্রভাবশালী নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির ভাই আনাস হাক্কানি টুইটারে লেখেন, ‘এ গাড়িতে চড়ে এমন একজন লোক ঘুরে বেড়াতেন, যিনি ইতিহাসের অসাধারণ সব ঘটনায় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেছিলেন এবং প্রায় ডজনখানেক দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে তালেবান যোদ্ধাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তাই তাঁর এ স্মৃতি চিহ্নটুকু দেশের জাতীয় জাদুঘরে রাখা উচিত।’
মাটি খুঁড়ে গাড়ি উদ্ধারের কিছু ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন মোহাম্মদ জালাল নামের তালেবান-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মী। ছবিতে দেখা যায়—আফগানিস্তানের দক্ষিণে জাবুল প্রদেশের একটি গ্রাম্য এলাকা থেকে মাটি খুঁড়ে বের করে আনা হচ্ছে প্লাস্টিক শিট দিয়ে ঢাকা গাড়িটি।
ওই টুইটবার্তায় মোহম্মদ জালাল বলেন, ‘মার্কিন আগ্রাসনের প্রথম দিকে এ গাড়িতে চড়ে কান্দাহার থেকে জাবুল প্রদেশে এসেছিলেন মরহুম আমির। গাড়িটি এখনও ভালো অবস্থায় আছে।’
তালেবানের একটি সূত্র জানায়, প্রায় ২০ বছর মাটির নিচে চাপা থাকার পর মোল্লা ওমরের ছেলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবের নির্দেশে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে।