মুন্সীগঞ্জের মেঘনায় শিগগিরই চালু হচ্ছে ফেরি
জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে শিগগিরই চালু হচ্ছে ফেরি সার্ভিস। আজ সোমবার এ খবর জানা গেছে।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার কাজীপুরা ও নারায়ণগঞ্জের চরকিশোরগঞ্জ ঘাটে ফেরির পল্টুন বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিন দিন আগেই মেঘনায় পৌঁছেছে স্বর্ণচাঁপা ও সন্ধ্যামালতি নামে দুটি ফেরি।
এর আগে ২০১৮ সালের ২ জুন মেঘনাবক্ষে ফেরি সার্ভিস চালু হলেও যানবাহনের স্বল্পতায় মাস খানেক চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে জেলা সদরের সঙ্গে গজারিয়া উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় মেঘনা নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে ট্রলার। উত্তাল মেঘনা পাড়ি দেওয়া ভয়ের ব্যাপার। বিশেষ করে বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলারে করে মেঘনা পারাপারে জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই অনেকেই জেলা শহর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাইক্রোতে করে বিকল্প সড়কপথ নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ও সোনারগাঁও হয়ে প্রায় ৬৯ কিলোমিটার ঘুরে গজারিয়ায় যাতায়াত করে আসছেন।
এ ফেরি সার্ভিস চালু হলে দীর্ঘ সড়ক পথ ঘুরে যাতায়াতের ভোগান্তি কমে আসবে। আবার ট্রলারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা পাড়ি দিতে হবে না। তাই ফেরি চালুর খবরে খুশি জেলা সদর ও গজারিয়া উপজেলার ভুক্তভোগী জনসাধারণ। কেননা তাদের আর ৬৯ কিলোমিটার সড়ক পথ ঘুরে যেতে হবে না।
জেলা শহরের জগদ্ধাত্রীপাড়া এলাকার বাসিন্দা লিপি আক্তার গজারিয়া উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরে সেলাই প্রশিক্ষক হিসবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁকে ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়েই কর্মস্থলে যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এমনও হয়েছে ঘাটে এসেছি আর ঝড় শুরু হয়েছে। তখন ঝড় না থামা পর্যন্ত ঘাটেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। আবার এমনও হয়েছে মেঘনার প্রবল ঢেউ দেখে ভয়ে আর কর্মস্থলে যেতে পারিনি।’
জেলা সদরের সিপাহীপাড়া এলাকার কায়সার ভুইয়া চাকরি করেন গজারিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে।
সহকারী এ নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, তিনি কর্মস্থলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দেন ট্রলার। তবে বিরূপ আবহাওয়ায় নদীপথ বাদ দিয়ে বিকল্প সড়কপথে ৬৯ কিলোমিটার ঘুরে কর্মস্থলে যেতে আসতে হয়। এখন ফেরি চালু হলে যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে, কমবে দুর্ভোগ।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ ফেরিঘাট স্থাপনের কাজ করা সহকারী প্রকৌশলী মহসিন মিয়া জানান, সপ্তাহ ধরে কাজ করা হয়েছে। গজারিয়া ও নারায়ণগঞ্জের চরকিশোরগঞ্জ ঘাটে পল্টুন প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ সকালে পল্টুন স্থাপনের কাজ শেষে বিআইডব্লিউটিসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ফেরি সন্ধ্যামালতির চালক ফজলু মিয়া জানান, ফেরি এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। এই ফেরিতে পাঁচটি বড় গাড়ি এবং চারটি ছোট গাড়ি বহন করা যাবে। চিটাগাং থেকে যারা লৌহজং হয়ে দক্ষিণবঙ্গে যাবে তাদের জন্য এই পথটি খুব সহজ হবে এবং কম সময়ে যেতে পারবে। তাকে ঢাকায় ঢুকতে হবে না ।
বিআইডব্লিউটিসির লৌহজং উপজেলা শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জামাল হোসেন বলেন, আজ আমাদের একটি দল গজারিয়া ফেরি সার্ভিস ঘাট পর্যবেক্ষণ করেছে। তাদের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর ফেরি চালুর দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হব।