হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপিকে ভয় দেখানো যাবে না : রিজভী
হামলা, মামলা, গুলি, হত্যা, গ্রেপ্তার করে বিএনপিকে ভয় দেখানো যাবে না মন্তব্য করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা গণতন্ত্র, মানুষের স্বাধীনতা, দেশের স্বাধীনতা, ন্যায় ও সত্যের জন্য লড়াই করছি। আমরা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) বিরুদ্ধে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এই লড়াই করতে গিয়ে অনেক সন্তানের জীবন কেড়ে নিচ্ছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের নয়ন মিয়া, নারায়ণগঞ্জের শাওন প্রধান, মুন্সীগঞ্জের শাওন, ভোলার নূরে আলম, আব্দুর রহিমসহ কত বলবো? এই দুই-তিন মাসের মধ্যে আপনি সাত থেকে আটজনের জীবন কেড়ে নিয়েছেন। তারপরও আমাদেরকে ভয় দেখাতে পারেননি। আমরা কিন্তু ভয় পাইনি। আমরা আপনাকে ক্ষমতা থেকে নামাবো, আপনার সরকারের পতন ঘটাবো, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। তারপরে আমরা ঘরে ফিরে যাব।
কুমিল্লাসহ সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে আবারও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন তিনি।
রিজভী বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় আবারও সরকার গায়েবি মামলা দেওয়া শুরু করেছে। মামলা দেওয়া হচ্ছে ককটেল ফাটিয়েছে, বোমাবাজি করেছে! অথচ কোথাও কেউ ককটেলের আওয়াজ পায়নি। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায়, ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এরা (আওয়ামী লীগ) মিথ্যা কথা এমনভাবে রপ্ত করেছে, এদের মিথ্যাতেই জন্ম; মিথ্যাতেই এরা বেড়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গতকাল স্বাচিপের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। ২০০১ সালের কথা। কিন্তু আমি বলতে চাই আপনি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। আপনি সেইবারেও চক্রান্ত করেছেন। আপনি মনে করেছিলেন, আপনার মনোনীত প্রেসিডেন্ট বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদকে যা বলবেন তাই করবে। বিএনপির যে বিজয় হয়েছে সেই বিজয়ী ফলাফল নাকচ করতে তাকে বারবার চাপ দিয়েছেন। কিন্তু বিবেকবান প্রেসিডেন্ট প্রধান বিচারপতি ছিলেন ন্যায়বিচারক। শেখ হাসিনার কথা শোনেননি। এজন্যই শেখ হাসিনার পরবর্তীতে বারবার তার বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনি সাবেক এমপি ইলিয়াস আলীকে গুম করেছেন, নির্বাচিত কাউন্সিলর চৌধুরী আলমকে আপনি গুম করেছেন, আরেক সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম হিরুকেও গুম করেছেন। আপনি এমপি, নির্বাচিত প্রতিনিধি, যুবক, ছাত্র কাউকেই ছাড়নেনি, ক্রসফায়ার দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আর ২০১৮ সালের নিশিরাতের নির্বাচন করেছেন। একটা একতরফা নির্বাচন, আরেকটা হচ্ছে নিশিরাতের নির্বাচন। গুম আর রক্তপাতের মধ্য দিয়েই আপনি জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। আর আপনি বলেন, আপনি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
এসময় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, দক্ষিণের সদস্য সচিব খন্দকার এনামুল হক এনাম, দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউদ্দিন সেন্টু, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বির, স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. জাহিদুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাউসার প্রমুখ।