সাংগ্রাই উৎসবে জলকেলিতে মেতেছে বান্দরবানের তরুণ-তরুণীরা
বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবে জলকেলিতে মেতেছে মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। প্রচলিত আছে, জলকেলির মাধ্যমে মারমা তরুণ-তরুণীরা ভাবের আদান প্রদান করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অতীতের সকল দুঃখ কষ্ট গ্লানি ধুয়ে মুছে পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের স্থানীয় রাজারমাঠে আয়োজন করা হয়েছিল জলকেলি বা মৈত্রী পানি বর্ষণ প্রতিযোগিতার। সাংগ্রাই উৎসব আয়োজন কমিটির উদ্যোগে পাহাড়ি মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে দলবদ্ধভাবে জলকেলী বা মৈত্রী পানি বর্ষণ খেলায় মেতে ওঠে। এছাড়াও রাজারমাঠসহ পাহাড়ি পল্লীগুলোতে জলকেলিতে মেতে উঠেছিল শিশু-কিশোররাও। অপরদিকে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাতব্যাপী উজানিপাড়া, জাদীপাড়াসহ পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলে হরেকরকমের পিঠা তৈরির প্রতিযোগিতা। রাতে বানানো পিঠা পাড়াপ্রতিবেশি আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বাড়িতে বিতরণ করে তরুণ-তরুণীরা।
এদিকে শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয়দিন সাঙ্গু নদীর চড়ে ধর্মীয়ভাবে বুদ্ধমূর্তি স্নান অনুষ্ঠানে মিলিত হয় পাহাড়ের মারমা সম্প্রদায়। অংশ নেয় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষেরা। কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষু, শ্রমণ ও বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী পুরুষেরা খালি পায়ে হেঁটে সাঙ্গু নদী চড়ে মিলিত হয় বুদ্ধমূর্তির স্নান অনুষ্ঠানে। কষ্টিপাথরের কয়েকশ বছরের পুরোনো বুদ্ধমূর্তিতে পবিত্র জল ঢালা হয় পুণ্যের আশায়। সবশেষে বিশ্ববাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনায় অংশ নেয় শতশত নারী পুরুষ।
উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং মারমা জানান, জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের মূল অনুষ্ঠানমালা শেষ হলেও পাহাড়ি পল্লীগুলোতে উৎসব চলবে আরও কয়েকদিন। বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় অনুষ্ঠানকে মারমা সম্প্রদায় প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই নামে পালন করে আসছে বহুবছর ধরে।