ডিস ব্যবসায়ী সোহেল হত্যা, আট আসামির যাবজ্জীবন
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার টেংগারচর গ্রামের ডিস সংযোগ দেওয়া সোহেল প্রধানকে হত্যা মামলায় সাত আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (২১ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-কামাল মোল্লা, জামাল মোল্লা, বিল্লাল মোল্লা, হারুন মোল্লা, মহসিন মোল্লা, আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম সাত জন সম্পর্কে ভাই।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহবুবুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিচারক রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া, দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারক সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
পিপি আরও বলেন, আজ রায়ের সময় আদালতে ছয় আসামি হাজির ছিলেন। তাদের শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। রায়ে বিচারক ফারুক, রুবেল, জাকির হোসেন, ইমাম হোসেন, মোশারফ হোসেন ওরফে মোহন, বিল্লাল খান, আনিছুর রহমান, আলী আকবর, নূরুজ্জামান, ওয়ারেছ কুরুনী, রানা মোল্লা ও আ. গাফ্ফারকে খালাস দিয়েছেন।
নথি থেকে জানা গেছে, সোহেল প্রধান (২৬) মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের ডিস লাইনের সংযোগ দেওয়ার কাজ করতেন। তার সহকারী ছিলেন একই গ্রামের জাবেদ হোসেন। আসামিরা গ্রাম্য দলাদলির রেশ ধরে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহেলকে খুন করার উদ্দেশে ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে ২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯টার দিকে অপহরণ করে। এরপর তাকে মারাত্মক জখম করে। সোহেল মরে গেছে ভেবে টেংগারচর থেকে আসামিরা সোহেলকে সিএনজিতে করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল।
আরও জানা যায়, পথের মধ্যে টহল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে তড়িঘড়ি করে সোহেলকে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে আসামিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। টহল পুলিশ সোহেলকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া যায়। পরে পুলিশ তার পরিবারকে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসলে তাদের কাছে ঘটনা বলে সোহেল। সেখানকার ডাক্তারের পরামর্শে সোহেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে নেওয়ার পথে আসামিদের নাম বলে সোহেল। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহেল। এ ঘটনায় সোহেলের মা সুফিয়া বেগম ৭ মে গজারিয়া থানায় মামলা করেন।
মামলার পরে ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পরে ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ গোলাম সারোয়ার।